ঢাকার ধামরাই এলাকায় দিবাগত রাতে একজন স্বল্প বয়সী মাদ্রাসা ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে, কিন্তু ঐ দিন বিয়ে বন্ধ করার জন্য ছাত্রীর বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। ভ্রাম্যমাণ আদালত বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দিলেও তারা সেটি অমান্য করে এবং বিবাহ কার্য সম্পাদন করে। যে অপরাধের কারণে বর ও কনের পিতাকে আটক করেছে উপজেলা উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানিক দল।
অভিযানে কনের বাবাকে আটক করে নিলেও স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ছাড়িয়ে রাখে। মনু মিয়াকে জোর করে ছি”নিয়ে নেয় সেখানকার বাসিন্দারা বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সুয়াপুর ইউনিয়নের করুঙ্গী ও সুতিপাড়া ইউনিয়নের ভুবননগর এলাকায়। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুতিপাড়া ইউনিয়নের ভুবননগর এলাকার মো. মনু মিয়ার মেয়ে ও রৌহা দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ঐশী আক্তারের সাথে সুয়াপুর ইউনিয়নের করুঙ্গী গ্রামের মো. মধু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। এজন্য গেট সাজানো থেকে শুরু করে রাজকীয় ভোজের আয়োজন করা হয় কনের বাড়িতে। সকাল থেকেই বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল।
গোপন সংবাদে ঐ মাদ্রাসা ছাত্রীর বাল্য বিবাহ বন্ধে শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীর পিতাকে জরিমা”না ও বাল্য বিবাহ বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ফারজানা আক্তার।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে রাতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বর-কনে বাসর করতে গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বর-কনের দুই পিতাকে আটক করা হয়। তবে পথিমধ্যে সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দফাদারের ওপর হামলা চালিয়ে কনের বাবা মনু মিয়াকে ছি/’নিয়ে নেয় গ্রামবাসী। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের গাড়িতে থাকায় বরের বাবা মধু মিয়াকে ছি”নতাই করতে পারেনি গ্রামবাসী।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। নবজাতক এবং মায়েদের অকাল প্রয়াণ ভগ্ন স্বাস্থ্য সহ অনেক নেতিবাচক পরিণতি রয়েছে। তাই খবর পেয়ে প্রথমে ঘটনাস্থলে গিয়ে নাবালিকা কনের বাবার সঙ্গে কথা বলে তাকে বিয়েতে বাধা দেয়া হয়। এরপরও অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করলে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত বিয়ে বন্ধ করলেও পরবর্তীতে বিয়ে সম্পন্ন করার কারণে বর ও কনের বাবাকে পরবর্তীতে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এদিকে স্থানীয় গ্রাম পুলিশকে তাদেরকে থানায় নেয়ার নির্দেশ দিলেও কনের বাবাকে গ্রাম পুলিশের নিকট থেকে কিছু লোক ছাড়িয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।