নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর এই প্রথম জাতীয় সংসদ ( National Parliament ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবিবুল আউয়াল। ( Habibul Awal. ) অনেক রাজনীতিবিদ এই আসন্ন জাতীয় সংসদ ( National Parliament ) নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন। এই নির্বাচনকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষাবিদের সাথে তার প্রথম দিনের বৈঠকে প্রায় ১৩ জন শিক্ষাবিদ অংশ নেয়।ধারাবাহিক ভাবে সংশ্লিষ্টদের সাথে সংলাপ শুরু করেছেন নবনির্বাচিত নির্বাচন কমিশন।
রোববার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে ইসির প্রথম বৈঠক হয়। এটি বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে। এতে সভাপতিত্ব করেন সিইসি কাজী হাবিবুল ( Kazi Habibul ) আউয়াল নিজেই। এ সময় চার কমিশনার, ইসি সচিব ও অতিরিক্ত সচিব উপস্থিত ছিলেন।
আজকের সংলাপে অংশ নেওয়া ১৩ শিক্ষাবিদদের মধ্যে ১১ জনের নাম নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলেন- অধ্যাপক সাদেকা হালিম ( Sadeka Halim ), অধ্যাপক মোহাম্মদ ( Mohammed ) ইয়াহিয়া আক্তার, অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক মফিজুল ইসলাম, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ( Anwar Hossain ), অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ( Nazmul Ahsan Kalimullah ), অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান ( Al Masud Hasanuzzaman ), অধ্যাপক জাফর উদ্দিন ( Zafar Uddin ), অধ্যাপক জাফর উদ্দিন ( Zafar Uddin ), অধ্যাপক ড. খান ও অধ্যাপক লায়লাফুর ইয়াসমিন।
আগের সংলাপে কমিশন মতামত নিলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ দেখিয়ে এবার তাতে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
সংলাপে নির্বাচন কমিশনকে কাজের মাধ্যমে আস্থা ও আস্থা অর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি এবং নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও পুলিশ ( police ) প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সংলাপে বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী ( Dr. Abdul Mannan Chowdhury ) বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আক্তার হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, ইভিএম ব্যবহার করবেন কি করবেন না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর কাজের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে হবে। তাই আগামী নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ইসিকে নিরপেক্ষ হতে হবে, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ হতে হবে। ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসন এক হতে পারে না। নির্বাচনের সময় প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখার জন্য ইসি আইনের মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত। তিনি বলেন, ভারতে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এখানে সুষ্ঠু করা সম্ভব হচ্ছে না কেন?
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দল প্রায় সবকিছুকে না বলছে। নির্বাচন কমিশনকে তাদের জন্য স্পেস করতে হবে। তাদের বারবার আমন্ত্রণ জানাতে হয়। নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও জবাবদিহিমূলক হয় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
অধ্যাপক ডাঃ জাফর ইকবাল বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে পারে যে সে তার দায়িত্ব সততার সাথে পালন করেছে, তাহলেই হবে। কে কি বলল তা শুনতে হবে না।
তিনি বলেন, এক কোটি ভোটার দেশের বাইরে থাকেন। তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া খুবই ভালো। ভোটের সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন নির্যাতনের শিকার হয়। তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে দুর্ভোগ লাঘবের উদ্যোগ নেওয়ারও আহ্বান জানান এ শিক্ষাবিদ।
নির্বাচনী সরকার প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার বলেন, আগামীতে নির্বাচন ভালো করাই সবার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে তা অস্বচ্ছ। আপনারা (ইসি) সরকারের বেতনভোগী কর্মচারী ছিলেন। তোমার তিনজন আমলা। আপনারা সরকারের সুবিধাভোগী। আপনি কিভাবে সরকার অপছন্দ করতে পারেন? চোখের লজ্জার বিষয়টিও আছে।
উল্লেখ্য, অনেক রাজনীতিবিদরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবিবুল আউয়ালকে সু-পরামর্শ দিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশনার হওয়ার পর এই প্রথম জাতিয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেছেন তাই অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন । তবে নিজেকে শক্ত করুন ন্যায়ের দিকে অগ্রসর হন।এই নির্বাচনকে ঘীরে অনেকে অনেক কথা তুলবে তাদের কথায় কান দিবেন না। বিগত দিনে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নানা মতভেদে সৃষ্টি হয়েছিল এবার সময় এসেছে সবার ভুল ভ্রান্তিদূর করার।