দেশে বর্তমান সময়ে লাখ লাখ স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষিত বেকার চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগছে। অনেকে জমি বিক্রির টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি জোটাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত খুইয়েছেন মোটা টাকা। যার কারণে দেশে বেকার যুবকদের মধ্যে হতাশা বেড়ে চলেছে। এদিকে নীলফামারীর ডিমলায় এক যুবক চাকরি না পেয়ে ক্ষোভে তার শিক্ষাজীবনের সকল সনদপত্র ছিড়ে ফেলেছেন। ঐ ৩১ বছর বয়সী যুবকের নাম বাদশা মিয়া। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি ফে”সবুক লাইভে গিয়ে তার সমস্ত পরিচয়পত্র ছিঁড়ে ফেলেন।
জানা যায়, বাদশা মিয়া ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের মহব্বর রহমানের ছেলে। দরিদ্র পরিবারে ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০১৪ সালে, নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করেন, কিন্তু অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি।
ফে”সবুক লাইভে বাদশা মিয়া বলেন, আসলে আমার ভাগ্য খারাপ। কত মানুষ ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়া করে খাচ্ছে। আর আমি এত সার্টিফিকেট নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি জোটাতে পারিনি। সনদ অনুযায়ী সরকারি চাকরির বয়স শেষ। এখন এগুলো রেখে লাভ কি? বয়স থাকতেই তো চাকরি জোটাতে পারিনি।
বাবা আমাকে না খেয়ে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আর ছোট ভাই-বোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। আজকের সমাজে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেরা। এরা না পারে চাকরি জোটাতে, না পারে অর্থের অভাবে ব্যবসা বাণিজ্য করতে।
বাদশার বাবা মহব্বর রহমান জানান, চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বাদশা। তার বাবা আরও বলেন, দিন দিন হতাশা বেড়ে যাওয়ায় কাউকে কিছু না বলে একাডেমিক সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলেছে।
এদিকে সরকারের সমালোচনা করে অনেকেই বলেন, সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ করেছে কোন কিছু চিন্তা না করেই। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন এত না বাড়িয়ে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেকারদের চাকরি দিতে পারতো ওই বাড়তি বেতন দিয়েই। অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা এত বেশি বেতন পান যে তারা ওই টাকায় বিলাসী জীবন যাপন করেন, এবং অধিকাংশই বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হতে বাংলাদেশী টাকা বিদেশে পাচার করা শুরু করেছে।