একজন ক্ষুদ্র মুরগী ব্যবসায়ীকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে প্রাণনাশ করেছেন স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্তরা। প্রয়াত ব্যাক্তির নাম আকবর হোসেন। আকবর হোসেনের পাখি নামের একটি মেয়ে আছে, দুর্বৃত্তরা সেই ছোট মেয়ের সামনে থেকেই তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং বাড়ী থেকে প্রায় ৩০০গজ দুরে তার প্রাণনাশ করে।টাকা লেনদেনের জের ধরেই এই প্রাণনাশের ঘটনা ঘটেছে, এমনটাই জানা গেছে পারিবারিক সুত্রে।
বাবা, যেও না, ওরা তোমাকে মেরে ফেলবে! ছোট্ট মেয়ে পাখির তাগিদ উপেক্ষা করে মুরগি ব্যবসায়ী আকবর হোসেন আকাকে তুলে নিয়ে যায় তারা। তার কিছুক্ষণ পরেই বাবার নিথরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে ছোট্ট সোনা পাখি। পাখির ডাক আর স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে ওঠে। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শেরপুরের কাফুরা পূর্বপাড়া এলাকায়। সুদ দিতে না পারায় মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আকবর হোসেন আকা (৪৩) নামে এক মুরগি ব্যবসায়ী মারা যান। বুধবার (৬ জুলাই) সকালে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম প্রয়ানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আকবর হোসেন আকবর শেরপুর উপজেলার গারিদহ ইউনিয়নের কাফুরা পূর্ব পাড়া গ্রামের প্রয়াত নবীর হোসেনের ছেলে ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক।
প্রয়াত আকবর হোসেনের জামাতা শামীম হোসেন বলেন, আমার শ্বশুর তার ব্যবসার মূলধন বাড়াতে ছয় মাস আগে ৫০ হাজার টাকা সুদে মুরগির ব্যবসা শুরু করেন। এই টাকায় দাদন ব্যবসায়ীদের প্রতি মাসে চার হাজার টাকা মুনাফা দিতে হয়েছে। ব্যবসা খারাপ হওয়ায় লাভের টাকা দিতে পারেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আজর ও রানু নামে দুই ব্যক্তি এসে আকবরকে তার বাসা থেকে ৩০০ গজ দূরে (ইবতেদায়ি মাদ্রাসার পাশের বাঁশঝাড়ের পাশে) ডেকে নেয়। সেখানে টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। এরপর আকবর আহত হয়ে বাড়িতে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রয়াত ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন, পাখির বাবাকে ডাকার সময় পাখি বলতে থাকে, বাবা তুমি যেও না, ওরা তোমাকে মেরে ফেলবে! এবং তাকে প্রয়ানই করেছে। শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিথরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রয়ানের পরিবার অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, প্রয়াত আকবর হোসেনের পারিবারিক সুত্রে জানায়, তিনি এলাকায় একজন ক্ষুদ্র মুরগী ব্যাবসায়ী। নিজের ব্যাবসার উন্নতির জন্য স্থানীয় একজন ব্যাক্তির কাছ থেকে সুদে ৫০ হাজার টাকা নেন। সেই টাকার সুদ মাসে ৪হাজার করে দিতে হয়। দেশে মহামারি ও অন্যান্য কারনে ব্যাবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পরায় প্রয়াত আকবর হোসেন কয়েক মাস সুদের টাকা দিতে পারেননি ফলে তাকে ডেকে নিয়ে সুদকারবারীরা প্রাণনাশ করেন।