Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বাবা ছেলেকে ডেকে নিয়ে বেদমভাবে প্রহার করলেন নারী কাউন্সিলর, জানা গেল কারণ

বাবা ছেলেকে ডেকে নিয়ে বেদমভাবে প্রহার করলেন নারী কাউন্সিলর, জানা গেল কারণ

সম্প্রতি একটি ঘটনায় বাপ ছেলেকে কাউন্সিল অফিসে ডেকে নিয়ে বেদমভাবে প্রহারের ঘটনা তুমুল আকারের সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়।  ভাইরাল হওয়ার বিশেষ কারণটি হলো তাদের দুইজনকে প্রহার করেছে এক নারী কাউন্সিলর।  যে ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।  ঘটনা ঘটে ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার সাভারের ছায়াবীথি মহল্লার ছাপা ব্যবসায়ী বাবা-ছেলেকে কাউন্সিলর কার্যালয়ে ডেকে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মা/রধর করে।

 

পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তা ও তার ভাগ্নে মো. শনিবার সকালে সাভারের ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়।

 

গুরুতর আহত দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ভিকটিম মো. নুরুজ্জামান সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

 

আহতরা হলেন- মোঃ নুরুজ্জামান (৫৬) ও তার ছেলে ইসমাইল হোসেন রবিন (৩১)। তারা দুজনই প্রিন্টিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সাভার বাজার রোডে রবিন আর্ট ও একতা সাইন অ্যান্ড প্রিন্টিং প্রেস নামে তাদের দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

 

আসামিরা হলেন- সাদ্দাম হোসেন (৩৪), রিদ্দাম (২৮), হিদ্দাম হোসেন (২৩), সোনামিয়া (৩৫) ও কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তা (৩৮)। তারা সবাই মহিলা কাউন্সিলরের ভাগ্নে।

 

এর আগে বুধবার রিদ্দাম, হিদ্দাম হোসেন ও সোনামিয়া রবিউল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে গুরুতর আ/ হত করে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাউন্সিলর মুক্তা পাশ করার পর থেকে এলাকার বিভিন্ন মানুষের ওপর নি/ র্যাতনের মাত্রা বেড়েছে।

 

ইতিমধ্যে তার বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। এছাড়াও তিনি এলাকার উঠতি যুবকদের দিয়ে মা/ দক সি/ ন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, অসহায় মানুষকে বিপন্ন করে তাদের বসতভিটা ও জমি দখল করে চলেছেন বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

 

আহত ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান অভিযোগ করেন, কাউন্সিলর মুক্তা ও তার ভাতিজারা আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে মা/ রধর করে। পরে তারা আমাকে কাউন্সিলরের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ডেকে নেন। এ সময় তার ভাতিজা সাদ্দাম হোসেন, রিদ্দাম, হিদ্দাম হোসেন, সোনামিয়া ও মুক্তা আমাকে ও আমার ছেলেকে স্টাম্প দিয়ে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আমার মাথায় স্টাম্প দিয়ে আঘাত করে। স্টাম্পের আঘাতে মেঝেতে পড়ে যাই।

 

স্থানীয়রা জানান, কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আশংকাজনক অবস্থায় দেখতে পান। পরে আমরা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। হাসপাতালে নুরুজ্জামান বলেন, গত পৌর নির্বাচনে মুক্ত কাউন্সিলর ভাই মোশাররফের পোস্টার ছাপিয়েছিলাম। মোশাররফের সাথে আমার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব থাকায় আমিও তাকে নির্বাচনে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি। তখন মুক্তা আমার উপর রেগে গিয়ে বললো- ‘আমাকে পাস করতে তোমার ভোটের দরকার নেই।

 

আমি প্রশাসনসহ সবাইকে ম্যানেজ করে ২ কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচনে পাস করব। নির্বাচনে জেতার পর থেকে মুক্তা আমাকে নি/ র্যাতন করে আসছে। এর আগেও লোকজন আমাকে আ/ ক্রমণ করে হ/ ত্যার চেষ্টা করে। সে আমাকে বলেছে তোমার কোটি কোটি টাকার বাড়ি ছেড়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাও, নইলে তোমাকে মে/ রে ফেলব। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর ছেলে রবিন বলেন, আমি ভোরে কবর জিয়ারত করতে গেলে কাউন্সিলরের ভাতিজা সাদ্দাম, হিদ্দাম ও রিদ্দাম আমাকে মুক্তার বাড়িতে নিয়ে মা/ রধর করে। সেখানে সোনামিয়াসহ মুক্তা আমাকে ঘুষি মারেন। এক পর্যায়ে সে আমার বাবাকে ডেকে তার সামনে আমাকে মারধর করে। বাবা তাদের মারধর করতে নিষেধ করলে কাউন্সিলর ও তার ভাগ্নেরা বাবাকেও মারধর করে।

 

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের সময় প্রতিপক্ষ আপন ভাইয়ের পোস্টার ছাপানো আমাদের অপরাধ। আমরা ব্যবসা করি প্রত্যেকের পোস্টার ছাপানোর অধিকার আমাদের আছে। কিন্তু সেই ক্ষোভ থেকে আমাদের এলাকা মুক্ত করতে কাউন্সিলর একাধিকবার আমাদের ওপর হামলা ও মারধর করছেন। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তা বলেন, সকালে গ্যারেজে এক যুবক ঘুরে বেড়াচ্ছিল। পরে তাকে রিদ্দাম ও হিদ্দাম আমার অফিসে নিয়ে আসে। তার বাবাকেও তলব করা হয়। একপর্যায়ে আমাদের ধস্তাধস্তিতে নুরুজ্জামানের মাথায় কীভাবে আঘাত লাগে তা বুঝতে পারিনি। সাভার মডেল থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম জিকু বলেন, মারধরের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ক্ষমতার জোরে অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য টার্গেট করে বিভিন্নভাবে তাদের হেনস্থা ও হু/ মকি-ধামকির দিতেন তারা।  এলাকার অনেকেরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।  তবে ক্ষমতাসীন ব্যক্তি হওয়া কারও সামর্থ্য ছিল না তাদের কিছু বলার। তারই প্রতিবাদে এবার এই নারী কাউন্সিলর তাদের শিক্ষা দিতে বাপ ছেলেকে কাউন্সিল অফিসে ডেকে নিয়ে বেদমভাবে প্রহার করেন।

 

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *