Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বাবার কষ্টের চাকরি, ছেলেরা বখাটে

বাবার কষ্টের চাকরি, ছেলেরা বখাটে

সম্প্রতি গত কয়েকদিন আগেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে
দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় কয়েকজন যুবককে। এরই মধ্যে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে নেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

তবে এ বিষয়ে তদন্ত চালাতে গিয়ে উঠে আসে তাদের পরিবারের নানা কষ্টের কথা।

একজনের বাবা ইউনিভার্সিটিতে বাগানের কাজ করেন, আরেকজনের বাবা প্রহরী। আরেকজনের বাবা গাড়িচালক।

একজন বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে বিবিএস ক্যাডার বানানো। আরেক বাবা চেয়েছিলেন তার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হোক।

বাবার স্বপ্ন আজ ভেঙ্গে গেছে। ছেলেরা বখাটে হয়ে গেছে। নারী নির্যাতন মামলায় তারা এখন কারাগারে। ছাবির এক ছাত্রীকে হয়রানির ঘটনায় জড়িত পাঁচ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

এই সার্কেলের মাস্টার আজিম হোসেনের বাবা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। তাদের বাড়ি বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন ইসলামিয়া কলোনিতে। সেই কলোনিতে আজিমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগেই তার বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, মেয়েদের শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালে আজিম ডাকাতি ও বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে যান। তিনি নিজেকে এলাকার স্থানীয় নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। কোনো শিক্ষার্থী বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় বসলে অ/শ্লী/ল মন্তব্য করতো। তার নেতৃত্বে সেখানে গড়ে ওঠে একটি অপরাধী চক্র। তারা বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত। আজিমকে চবি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সাইফুল ইসলাম তাকে সবাই চেনেন বখাটে সাইফুল নামে। বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হয়েও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। সাইফুল তার বাবার কাছ থেকে কয়েক দফা টাকা নিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র মোঃ নুরুল আবছার বাবু এই গ্রুপে যোগ দিয়ে অপরাধ জগতে পা রাখেন। বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগে চাকরি করেন। তিনি একটি সন্তানকে বড় করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মেধাবী বাবু মাতাল হয়ে ক্যাম্পাসে অপকর্ম করে বসেন। গ্রেফতারের পর র‌্যাব হেফাজতে থাকা অবস্থায়ও তাকে হাসতে দেখা যায়। তাকে চবি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাবা বলেন, আমি আমার সব কষ্টের টাকা দিয়ে ছেলেকে বড় করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি। আমি নিজের জন্য কিছুই করিনি। সন্তানের জন্য সব করেছি। সে যা চেয়েছেন তা দিয়েছি। এরপরও ছেলে যদি এমন করে, বাঁচতে ইচ্ছে করে না’।

এ ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে চবির পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে বইছে ব্যাপক শোরগোল। চবির শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।

About Rasel Khalifa

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *