সম্প্রতি বাবাকে নিথর করে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পন করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী। এই খবরটি সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসার পর সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। তবে এই ঘটনায় দাবি করা হয়েছে, অভিযুক্ত ছেলে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি, যার কারণে সে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের নিকট নিজেকে সুস্থ হিসেবে দাবি করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে বাবা ফজলে আলম মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে জোর করে ওষুধ খাওয়াতেন। কে জানত জোর করে ওষুধ খাওয়ানোই একদিন কাল হয়ে দেখা দিবে! ছেলের হাতেই প্রাণ হারাতে হবে বাবাকে! রোববার গভীর রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর একুশে মোড় মহল্লায় এ হ”/ত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিথর দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ রিপোর্ট করে জানায়, ফজলে আলমের বুকে একটি ধা”/রালো ছু”/রি ঢোকানো হয়েছে। এরপর ছেলে গোলাম আজম রড দিয়ে মাথায় আ”/ঘাত করে এবং মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মৃ”/ত্যু নিশ্চিত করে।
বাবাকে নির্ম”/মভাবে হ”/ত্যার পর গভীর রাতে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন গোলাম আজম। থানায় এসে বললেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করুন, বাবাকে খুন করেছি।’
স্থানীয়রা জানান, ঘাত”/ক ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। মামলার প্রস্তুতিও চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর গোলাম আজম বাইরে থেকে ঘরে তালা দিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ তার বাবার নিথর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে পরিবারের প্রতি রাগান্বিত হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রতিবেশী ও নিকটাত্মীয়রা জানান, প্রয়াত ফজলে আলম চার ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। গোলাম আযম তার দ্বিতীয় পুত্র। তিনি রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে দিনাজপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে।
গোলাম আযম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। বাবা ফজলে আলমের শারীরিক অবস্থার জন্য চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
পুলিশ তাকে হেফাজতে নেওয়ার আগে সাংবাদিকরা গোলাম আযমের কাছে তার বাবাকে হ”/ত্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার নামের সমস্যা। গোলাম আজম আমার নাম হওয়ায় সরকারি চাকরি হয়নি। সবখানে নাম পরিবর্তন করতে বললে বিষয়টি আমার বাবাকে বারবার জানালেও তিনি নাম পরিবর্তন করতে দেননি।’
তিনি আরও বলেন, “আমি যখন রাজশাহীতে ছাত্র ছিলাম, তখন আমার নামের কারণে আমাকে কয়েকবার জে”লে যেতে হয়েছে। আমি বিবেকবান, আমাকে মানসিকভাবে অসুস্থ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাকে নানাভাবে নির্যা”/তন করা হয়েছে। কাউকে বোঝাতে পারিনি যে, আমি মানসিকভাবে অসুস্থ নই। আমার বাবা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। এমন অবস্থায় আমার স্ত্রী আমাকে তিন মাসের শি”/শুকে রেখে বাবার বাড়িতে চলে যায়।
তবে প্রকৃত ঘটনা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তিনি কোনো চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা নিচ্ছেন কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনার পর বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।