কলেজ ছাত্রী মিম আক্তার। লিজার সাথে তার পরিচয় হয় ফেসবুকে। সেই পরিচয় থেকেই প্রেমে পড়েন তারা। একপর্যায়ে প্রেমিকাকে ভালোবেসে স্বামীকে তালাক দেন। এরপর দুই দফা চেষ্টার পর তৃতীয় দফায় বান্ধবীর সঙ্গে পালিয়ে সংসার পাতেন তারা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মায়ের দায়ের করা অপহরণ মামলায় তার বান্ধবী লিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে কলেজছাত্রী মিমসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বান্ধবী লিজাকে কারাগারে পাঠান বিচারক বেগম সুমাইয়া রিজভী মৌরী। এবং লিজাকে ছেড়ে তার পরিবারের সাথে যেতে আপত্তি জানালে, কলেজ ছাত্রী মিমকে সেভ হোমে পাঠানো হয়। এমন ঘটনায় বরিশাল আদালত চত্বরে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কলেজ ছাত্রী মিম বরিশালের মুলাদী উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী সহিদুল ইসলামের মেয়ে।
মিম আক্তারের পরিবারের দাবি, লিজা তার মেয়েকে ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে রেখেছিল। লিজার সঙ্গে কেন যাবে জানতে চাইলে তার ভাই নাঈম হোসেন বলেন, মিম অস্বাভাবিক উত্তর দিত।
মিমের বোন ফাতিমা জানান, তার বোনের ঢাকার হাজারিবাগ এলাকার শংকর জাফরবাদ ২৮৩/১ এর ইসলাম মঞ্জিলের মোজাম্মেল হকের মেয়ে লিজার ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম হয়। পরে কোনো ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হতো না মিম। বরং রোবার লিজাকে বিয়ে করবে বলে বায়না ধরে।
আর এ জন্য পাঁচ বছর আগে বিয়ে হওয়া স্বামীকে তালাকও দেন মিম। কয়েকদিন আগে মিমের বাসায় গিয়েছিলেন লিজা। এরপর লিজাকে নিয়ে পালিয়ে যান মিম। পুলিশের সহায়তায় মিমকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তারা দ্বিতীয়বার পালানোর পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হয়। কিন্তু হাল ছাড়েননি মিম ও লিজা। অবশেষে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি লিজাকে নিয়ে আবারও পালিয়ে যান মিম।
এ ঘটনায় মিমের মা জিয়াছমিন বাদী হয়ে আদালতের সহায়তায় লিজাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মুলাদী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে মিম ও লিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুলাদী থানার ওসি মো. জাকারিয়া বলেন, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার আদালতের নির্দেশে হাজারীবাগ এলাকা থেকে অপহৃত তরুণীকে উদ্ধার এবং লিজা খান নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে কিশোরী মিমকে সেফ হোমে এবং গ্রেফতারকৃত লিজাকে আদালত থেকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।