Monday , November 25 2024
Breaking News
Home / International / বান্ধবীকে বিয়ে করতে লিঙ্গ পরিবর্তন, রাজি না হওয়ায় পুড়িয়ে হত্যা

বান্ধবীকে বিয়ে করতে লিঙ্গ পরিবর্তন, রাজি না হওয়ায় পুড়িয়ে হত্যা

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের এক তরুণীকে তার জন্মদিনে সহপাঠী ও প্রিয়জনের হাতে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে, ব্লেড দিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয় এবং তারপর পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারা হয়।

গত শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দক্ষিণ চেন্নাইয়ের কেলাবাক্কামের শান্ত শহরতলির কাছে থালাম্বুরে এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, খুন হওয়া তরুণীর নাম আর নন্দিনী (২৪)। যিনি মাদুরাইয়ের বাসিন্দা ছিলেন। যাইহোক, পড়াশুনা শেষ করে তিনি চেন্নাইয়ে কাজ করতে শুরু করেন। তার শৈশবের বান্ধবী হলেন ভেত্রিমরণ বা পান্ডি মহেশ্বরী (26), যিনি নিজেও একজন প্রকৌশলী।

ছোটবেলা থেকেই তাদের বন্ধুত্ব ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ। পরে সম্পর্ক এতটাই গভীর হয় যে তারা সমকামী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি, নন্দিনীকে বিয়ে করার জন্য ভেট্রিমরন তার লিঙ্গ পরিবর্তন করেছিলেন। কিন্তু অবশেষে নন্দিনী ভেট্রিমরানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। সেখান থেকেই তাদের সম্পর্কের ফাটল শুরু হয়।

নন্দিনী তার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরে, ঘনিষ্ঠতা হ্রাস পায়, কিন্তু তিনি ভেট্রিমরানের সাথে যোগাযোগ রাখেন। বিএসসি পাশ করার পর নন্দিনী চেন্নাইয়ের একটি আইটি কোম্পানিতে চাকরি পান এবং মামার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন।

শনিবার (23 ডিসেম্বর) ভেথ্রিমারন নন্দিনীকে ফোন করে এবং একসাথে কিছু সময় কাটাতে চায়। নন্দিনীর সাথে দেখা করতে গেলে জন্মদিনের উপহার হিসেবে কিছু জামাকাপড় কিনে দেন তিনি। ভেট্রিমরন পরে নন্দিনীকে স্থানীয় একটি অনাথ আশ্রমে নিয়ে যান। তারা সেখানে অনুদানও দেয়।

পরে ভেট্রিমরান নন্দিনীকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। নন্দিনী তার প্রস্তাব মেনে নিয়ে মোটরসাইকেলে ওঠে। একপর্যায়ে ভেট্রিমরণ একটি নির্জন স্থানে বাইক থামিয়ে নন্দিনীর ছবি তোলেন।

মোটরসাইকেল থেকে নামার পর শিকল দিয়ে নন্দিনীর হাত-পা বেঁধে দেয় ভেট্রিমরন। নন্দিনী এমন করছ কেন জিজ্ঞেস করলে সে বলে, তুমি মজা করছ। এর কিছুক্ষণ পরেই ব্লেড দিয়ে নন্দিনীর গলায় ছুরিকাঘাত করে ভেট্রিমরন। পরে নন্দিনীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে নন্দিনীকে এভাবে রেখে ভেট্রিমরন পালিয়ে যায়।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নন্দিনীকে ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। তরুণীর শরীরে তখনও প্রাণ ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে নন্দিনী মৃত্যুর আগে ভেট্রিমরানের মোবাইল নম্বরের কথা পুলিশকে জানাতে পেরেছিলেন।

পুলিশের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ভেথ্রিমারন। সে নিজেকে নন্দিনীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে পরিচয় দেয়। এমনকি পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে নন্দিনীকে নিয়ে হাসপাতালে যান তিনি। কিন্তু তারপর থেকে ভেট্রিমরান নিখোঁজ। এরপর তাকে সন্দেহ করে পুলিশ।

নন্দিনী মারা যাওয়ার পর ভেথ্রিমারনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, লিঙ্গ পরিবর্তনের পরও নন্দিনী তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। তার ওপরে, কয়েকদিন ধরেই এক সহকর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে নন্দিনীর। এসব ঘটনায় জমে থাকা ক্ষোভ থেকে নন্দিনীকে হত্যা করে ভেট্রিমরন। আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন

স্থানীয় পুলিশ কমিশনার অমলরাজ বলেছেন, ভেট্রিমরানের বিরুদ্ধে পূর্বে যৌন নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, তিনি আগে হিংসাত্মক বা আক্রমণাত্মক আচরণ করেছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে তদন্ত চলছে এবং আদালত তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।

About Zahid Hasan

Check Also

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দাবি তোলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *