টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন, তার অধিকাংশই বাদ পড়েছেন পুরনোদের। তবে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়লেও আগের অনেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে ‘সান্তনা পুরস্কার’ হিসেবে সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হচ্ছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত পাঁচ কার্যদিবসে ৫০টি স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে গত মেয়াদে মন্ত্রিসভায় থাকা ১৩ জন সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ১৩টি কমিটিতে সভাপতির পদ পেয়েছেন। গত মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সংখ্যা ছিল ৩০।
মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়াদের মধ্যে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
এ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
সরকারের শেষ মেয়াদে এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকা ইমরান আহমেদ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন শরীফ আহমেদ। সরকারের শেষ মেয়াদে তিনি এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
এছাড়া আ হ ম মুস্তফা কামালকে অর্থ, এম এ মান্নানকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের গত মেয়াদে ওই দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন তারা। গত মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি করা হয়। টিপু মুন্সির ব্যবসা; আব্দুর রাজ্জাক কৃষি; এসএইচ রেজাউল করিমকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জাহিদ আহসানকে সভাপতি করা হয়েছে। ওই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয় সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে।
সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানরা কী কী সুবিধা পান?
মন্ত্রণালয়ের কাজের জবাবদিহিতা ও অগ্রগতি তুলে ধরতে মন্ত্রিপরিষদের পাশাপাশি ছায়া মন্ত্রণালয় হিসেবে প্রতিটি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। পদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসে অন্তত একটি সভা হতে হবে।
নির্বাচিত ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়। কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে সংসদ নেতার অনুমতিক্রমে সংসদের চিফ হুইপ কমিটি গঠন করেন। প্রয়োজনে কমিটি পুনর্গঠন করা হতে পারে।
একজন চেয়ারম্যান ছাড়াও ৯ জন সংসদ সদস্য এই কমিটির সদস্য। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা ওই কমিটির সদস্য। তবে প্রতিমন্ত্রীর বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে অংশ নেন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী।
সংসদীয় কমিটির চেয়ারপারসনদের আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদীয় এলাকায় একটি অফিস দেওয়া হয়। এর বাইরে একজন ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস), একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পান।
এছাড়া অফিস বিনোদন খরচ বাবদ মাসিক ১২ হাজার টাকা ভাতা পান। সংসদ সচিবালয় প্রদত্ত একটি ফ্ল্যাট পায়। এর বাইরে কোনো বিশেষ সুবিধা নেই। তবে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কাজের কারণে রাষ্ট্রপতিসহ অন্যদের বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে।