Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বাদ গেলো না ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও,ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন-বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ছাত্রলীগ নেত্রীর

বাদ গেলো না ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও,ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন-বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ছাত্রলীগ নেত্রীর

ছাত্রলীগের বিতর্কিত কর্মকান্ড যেন থামছেই না দেশে।একের পর এক বিতর্কিত ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে এই ছাত্র সংগঠনটি। এবার তারা ছাড় দিলো না দেশের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কেও। জানা গেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ফুলপরী খাতুন নামে এক তরুণীকে রাতভর হলের কমনরুমে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের কমনরুমে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাদের বিরুদ্ধে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। এ ছাড়া তার সহযোগী তাবাসসুম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নিহত ফুলপরী খাতুন একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফুলপরী খাতুন ৭ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী ক্লাসে যোগ দিতে শেখ হাসিনা হলের ৩০৬ নম্বর কক্ষে যান। ৯ ফেব্রুয়ারি তাবাসসুম তাকে রুমে দেখা করতে বলে। অসুস্থতার কারণে সময়মতো রুমে যেতে পারেননি ফুলপরী। এরপর তাবাসসুম ও তার সহযোগীরা তার ওপর হামলা চালায়।

পরে কক্ষে গেলে তারা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং গলা টিপে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় তাকে না জানিয়ে হল ত্যাগ করায় অভিযুক্তরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে থাকে। এ ঘটনার জের ধরে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ফুলপরীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।এ ছাড়া তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে আসামিরা। পরদিন বিকেলে হলের প্রভোস্ট ও সহকারী প্রক্টরের হস্তক্ষেপে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।

এদিকে ওইদিন বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও ৭-৮ জনকে গণরুমে নিয়ে যান। তারা তাকে কক্ষে নিয়ে চড় মারতে থাকে। কেন তাকে মারছেন জানতে চাইলে তিনি তার মুখ চেপে ধরে চোয়ালে চাপ দেন।

এ সময় সানজিদা ভিকটিমকে বলেন, ‘আমাদের জান, আমরা কত খারাপ? আপনি কি জানেন আমরা আপনার জন্য কি করতে পারি? আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা আছে?’

অভিযোগে ভিকটিম বলেন, “আমি কান্নাকাটি করে তাদের পা ধরে ক্ষমা চাইলে তারা আমাকে লাথি দেয়। আমার বাবা-মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এর পর সে তার হাত দিয়ে আমার বুকে থাপ্পড় দেয় এবং গামছা দিয়ে জড়িয়ে ধরে। ঘাড় ঘেঁষে তাকে আবার ছেড়ে দেয়।একপর্যায়ে তারা আমার কাছ থেকে একটি নোংরা গ্লাস চেটে ভিডিও ধারণ করে।পরে তারা জোর করে জামা খুলে ভিডিও রেকর্ড করে।

এ সময় তারা বলেন, বাইরের কাউকে এসব কথা বললে তোর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেব।

এ ছাড়া ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অন্তরা বলেন, প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ দিলে তোকে মেরে কুকুর খাইয়ে দেব। পরে বেলা ৩টার দিকে তারা আমাকে একটি গণরুমে পাঠায়। পরদিন সকালে আমি ভয়ে হল থেকে পালিয়ে গ্রামের বাড়ি পাবনায় যাই।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী বলেন, এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ঘটনা। মেয়েটির সাথে আমার কিছুই হয়নি। ওই ছাত্র আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়েছে।

প্রক্টর অধ্যাপক ডা. শাহাদাত হোসেন আজাদ বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। উভয় পক্ষের কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. শেলিনা নাসরীন বলেন, “আমি ওই ছাত্রের কথা শুনেছি। র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করি। সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত,এ দিকে এই ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে সবখানে শুরু হয় নানা ধরনের সমালোচনা। এ নিয়ে কথা বললে ইবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের অনুমতি নেই। আমি নীতিগতভাবে এটা কখনোই সমর্থন করি না। বিষয়টি কীভাবে হলো, আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি এই ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি যেন কোনো ভাবেই খাতা কলমে আবদ্ধ না থাকে।

About Rasel Khalifa

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *