রাজধানীর সন্নিকটে পূর্বাচলে আয়োজন করা হয়েছে এবারের বাণিজ্য মেলা। এই মেলায় অনেক ধরনের পন্য দ্রব্যের স্টল সারি সারি ভাবেই সজ্জিত রয়েছে। মেলায় এসেছে ভিন্ন ধরনের কিছু পন্য যার মধ্যে একটি সুদৃশ ডিজাইনের খাট সকলের নজর কেড়েছে। আর কাড়বেই না বা কেন এই খাটটিতে শোভা পাচ্ছে ১৬টি ছোট এবং বড় সাইজের পরী। রাজকীয় এই পালঙ্ক খাট নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা এবং এটি এক পলক দেখার জন্য অনেকে ভীড় করছেন।
খাটের চার কোণে ডানা মেলে দাঁড়ানো অবস্থায় রয়েছে চারটি কাঠের তৈরি পরি। এই পরীগুলোর ডান হাতে উপর রয়েছে প্রজাপতি। জলম ও বক্স অংশের ওপর আরও ১২টি ছোট-বড় পরী রয়েছে। খাটজুড়ে রয়েছে হাতে খোদাই করা নকশা। ১৬টি পরী খচিত কাঠের কাজ ছাড়াও খাটের বিভিন্ন ডিজাইন রয়েছে। সেগুন কাঠে সম্পূর্ণ হাতে খোদাই করা এই রাজকীয় খাটটি।
খাগড়াছড়ির গুইমারা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রি মো. আবু বক্করের (৩৫) এর তৈরি খাটের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। পরী পালঙ্কের খবরও ছড়িয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। তাই অনেকেই সেলফি তোলা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার সুযোগ নেয়। করছেন শেয়ারও।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলা গুইমারা ইউনিয়নের ফাতেমা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক সত্ত্বাধিকারী মো. নুরন্নবী শখের বশে খাট তৈরি করেন। নুরন্নবী শখের বশে তৈরি করলেও ঢাকার বাণিজ্য মেলায় বিক্রির জন্য খাট নিয়ে আসেন।
২০১৭ সালে নুরুন্নবীর বাড়িতে শুরু হয় পরী পালঙ্কের কাজ। গত বছরের ১৬ মার্চ খাটের কাজ শেষ হয়। এটি আবু বকর একাই ৩ বছর ২ মাসে কোনও সহযোগী ছাড়াই তৈরি করেছেন।কাঠমিস্ত্রি তার কাজের পারিশ্রমিক নিয়েছেন ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এটি তৈরি করতে প্রায় ৮৫ ঘনফুট কাঠ লেগেছে। খাটটি বার্নিশ করতে লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়েছে। মোট খরচ ৪০ লক্ষ টাকা।
এক কোটি টাকা হলে খাটটি বিক্রি করবেন বলে জানান নুরুন্নবী। তিনি সাংবাদিকদের জানান, এরই মধ্যে দাম উঠেছে ৫০ লাখ টাকা। তবে নুরুন্নবী আরও বলেন, এক কোটি টাকা চাইলেও একটু কমেই বিক্রি করবেন।
তিনি বলেন, যিনি এই খাটটি কিনবেন তাকে খাটসহ উপহার হিসেবে ইয়ামাহা ব্যান্ডের একটি এফজেড মোটরসাইকেল ও ১ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার দেওয়া হবে।
কাঠমিস্ত্রি মো. আবু বক্কর বলেন, আমার অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল এমন একটি খাট বানানোর; অবশেষে এটা তৈরি করেছি। এ রকম আরও কিছু জিনিস বানানোর করার ইচ্ছা আছে। অত্যাধুনিক নৈপুণ্যের খাট বা পালঙ্ক তৈরিতে কোনো ক্যাটালগ ব্যবহার করা হয়নি; আমি যা করেছি সবই আমার আবেগ থেকে। খাটটিতে ১৬টি পরি, ৪টি প্রজাপতি ও ৪টি চাঁদ রয়েছে।
মেলাজুড়ে সবার এই খাটটির দিকে সবচেয়ে বেশি নজর এবং এই খাটটির দর দামও জানার চেস্টা করছেন অনেকে। এই পালঙ্কটি কত দামে বিক্রি হতে পারে বা কে মালিক হবে এই পালঙ্কটির সেই বিষয়ে জমে উঠেছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে এই খাটটির মালিক সুবিধাজনক দাম পেলে বিক্রি করে দিবেন বলেও জানা গেছে।