সাম্প্রতিক সময়ে অনন্ত জলিলের প্রযোজনায় এবং তার অভিনীত একটি ছবি আলোচনায় উঠে এসেছে। বিপুল অর্থের বাজেটের এই ছবিটি ইতিমধ্যে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কারিগরি দিক থেকে আরম্ভ করে হলিউডের মত অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রের অ্যাকশন দেখা যাবে এই সিনেমায়। যেটা একটি ভিন্ন ধাঁচের ছবির স্বীকৃতি পেয়েছে। তার এই সিনেমার মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো বিদেশি সিনেমার মতো অ্যাকশন দেখার সুযোগ পেয়েছেন দর্শক।
দীর্ঘ আট বছর পর নতুন সিনেমা নিয়ে হাজির হলেন এই নায়ক। গত (১০ জুলাই) ঈদে দেশের ১১৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় অনন্ত জলিল পরিচালিত ‘দিন দ্য ডে’। বর্ষা বরাবরের মতোই তার সঙ্গী। বর্তমানে সিনেমাটির প্রচারণার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন অনন্ত-বর্ষা। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ জুলাই অনন্ত জলিল ঘোষণা দেন, ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় যমুনা ব্লক বাস্টারে সিনেমা দেখতে যাবেন এবং সেখানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের বিখ্যাত সব তারকারা। তার ডাকে সাড়া দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় মুখ হিরো আলম।
সেখানে ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমার বিভিন্ন দিক নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেই আলোচনার চৌম্বক অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমা নিয়ে কী ভাবছেন?
অবশ্যই ভালো। যেহেতু ঈদে আমাদের তিনটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সব সিনেমা প্রেমীদের এই তিনটি সিনেমা দেখতে হবে। এই প্রচেষ্টা আমাদের মধ্যে থাকতে হবে। আজই প্রথম ‘দিন দ্য ডে’ দেখতে এলাম। আর অবশ্যই মানুষের ভালোবাসার কারণেই আজ আমাদের সিনেমা দেখার আগ্রহ বাড়ছে। অনেকে বলেন, বাংলাদেশের ছবি ভালো না। ভালো ছবি তৈরি হলেই যে দর্শক আসে তা আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে। এটা দেখে আমি অবশ্যই খুশি।
অনন্ত জলিলকে কিছু বলবেন?
শাস্ত্রে একটি কথা আছে, ‘যত বেশি গুড় দেবে, তত বেশি মিষ্টি হবে’। দেখা যাবে ভালো সিনেমা হলে দর্শক আসবে। এবার আলোচনায় আছে মাত্র তিনটি সিনেমা। আমার বিশ্বাস এরকম সিনেমা হলে দর্শক বাড়াবে। তবে অনন্ত জলিল ভাইকে একটা কথা বলতে চাই, ভবিষ্যতে আপনি শুধু এককভাবে সিনেমা করবেন না… কারণ আপনি সিনেমা ভালোবাসেন, আপনিও ভবিষ্যতে সিনেমা নির্মাণ করবেন। আপনি কোটি টাকা দিয়ে ১০টা সিনেমা প্রযোজনা করেন। এটা আমাদের সিনেমার জন্য এমনকি দেশের জন্যও ভালো হবে। আমরাও আছি আপনার চলচ্চিত্রের সাথে, চলচ্চিত্রের পাশেও আছি। তাই আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ, দয়া করে কিছু সিনেমা প্রযোজনা করুন।
আপনি কেন আসলেন সিনেমা হলে?
দর্শকরা আমাকে ভালোবাসেন বলেই আমাকে নিয়ে কথা বলেন, তাই আমি নিজেও চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত। তাই সিনেমা দেখতে এসেছি।
‘ডে দ্য ডে’ বাজেট নিয়ে কী বলবেন?
দেখুন, এক টাকা খরচ করলে আমরা বলি দুই টাকা, একই রকম বলে সবাই। এখন এই সিনেমার বাজেট আসলে ৮০ কোটি, ১০০ কোটি নাকি ১২০ কোটি, আমি আসলে সঠিকভাবে বলতে পারছি না। এই সিনেমার প্রযোজক অনন্ত জলিল ভাই। যেহেতু তিনি বলেছেন এই সিনেমার বাজেট ১০০ কোটি টাকা, তাই মেনে নিতে হবে। এখন এই সিনেমার সাথে যারা বেশি জড়িত তারাই ভালো বলতে পারবেন বাজেট কত। আমি সত্যিই এটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাই না।
৩ সিনেমা নিয়ে আপনি কি ভাবছেন?
আসলে ৩টা সিনেমাই হচ্ছে আমাদের। এখন আমাদের ৩টা সিনেমাই দেখতে হবে। কোনো সিনেমাই কারো থেকে কম নয়। সবাই যার যার জায়গা থেকে ভালো করছে। আমরা যদি একটি উদাহরণ দেই, বাবা-মা ৫ সন্তানকে ১ সন্তানের মতো ভালোবাসেন। কোনো সন্তানই খারাপ নয়। সিনেমাও তাই। ১টা মুক্তি পেল নাকি ১০টা ওটা কেনো বিষয় না। সব সিনেমাই আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের সিনেমা। ‘দিন দ্য ডে’ ১০০ কোটি রুপি বাজেটের সিনেমা, পরাণ বা সাইকো কম বাজেটের দুটি সিনেমা। এটা বলার মত কিছু নয়। মোদ্দা কথা হল সিনেমা হল সিনেমা। তিনটিই আমাদের বাংলাদেশের সিনেমা। তাই কম টাকায় হলে কি হবে আর বেশি টাকা হলে কি হবে সেটা কোনো বিষয় না। আশা করি তিনটি সিনেমাই সফল হবে।
প্রসঙ্গত, ‘দিন দ্য ডে’ বাংলাদেশ ও ইরানের যৌথ প্রযোজনার ছবি। সিনেমাটির বাজেট ১০০ কোটি টাকা। এই সিনেমার বাংলাদেশ অংশের প্রযোজক অনন্ত জলিল। অর্থাৎ বাংলাদেশে শুটিংয়ে যে টাকা খরচ হয়েছে, সেই অংশটুকুই তিনি বিনিয়োগ করেছেন। ইরানের প্রযোজকরা অন্য দেশে শুটিংয়ের খরচ বহন করেছেন। বাজেটের কারণে ইতিমধ্যেই আলোচনায় রয়েছে ‘ডে-দ্য ডে’। মুক্তির পরও আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি।
এদিকে হিরো আলম তার ভিন্ন ধাঁচের অভিনয়ের জন্য সমালোচনা থাকেন প্রায় সবসময়। তিনি শুধু একজন অভিনেতা নন, একজন গায়কও। তিনি ইউটিউবে তার একটি চ্যানেলে মাঝে মাঝেই তাঁর গানের ভিডিও আপলোড করে থাকেন, যেটা নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা কম হয় না। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে তিনি বেশ নামই করেছেন।