পৃথিবীতে সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসার কোন তুলনা হয় না। একজন মা তার নিজের জীবন দিয়ে হলেও সন্তানের জীবন রক্ষা করতে পিছপা হন না। নিজের জীবন বিপন্ন করে ও সন্তানের জীবন রক্ষা করতে মা ছুটে যান যেকোনো ধরনের বিপ’দের মুখে। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলের একটি এলাকায়। মাত্র ৮ বছর বয়সী পুত্রসন্তানকে মুখে ধরে নিয়ে দৌড়াচ্ছে চিতাবাঘ, আর সেই সন্তানকে রক্ষা করতে চিতা বাঘের পিছনে ছুটছেন মা। চিতাটির পিছনে এক কিলোমিটার ধাও’য়া করে ওই মা তার সন্তানকে রীতিমতো ল’ড়াই করেই বাঁচান।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের বড়ি ঝিরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যানের পাশেই আদিবাসী গ্রাম বাদি ঝিরিয়া। সেই গ্রামের বাসিন্দা কিরণ নামে ওই নারী। রবিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কিরণ তার বাড়ির বাইরে রান্না করছিলেন। তার তিন সন্তান পাশেই খেলছিল। কখন যে একটি চিতাবাঘ এসে তার সন্তানদের দিকে নজর দিয়েছে, তা টেরও পাননি কিরণ। চিতাবাঘটি নিশানা করেছিল তার ৮ বছরের ছেলে রাহুলকে।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছেলেকে মুখে করে নিয়ে দৌড় দিয়েছিল চিতাবাঘটি। চোখের সামনে এমন ভ’য়ান/ক দৃশ্য দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি কিরণ। বাঘের পিছু পিছু জঙ্গলের দিকে এক কিলোমিটার দৌড়ান তিনি। ধাও’য়া করতে দেখে বাঘও কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিল। নিজেকে বাঁচাতে শিকা’রকে মুখে নিয়েই ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে পড়ে।
কিন্তু কিরণ ছাড়ার পাত্রী নন। এবার তিনি খুব ধীর মস্তিষ্কে ছেলেকে বাঘের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা শুরু করেন। বাঘটিকে নানাভাবে ভ’য় দেখানোর চেষ্টা করেন। বাঘও নাছোড়।
ঐ বাঘটির একদম কাছে গিয়ে ছেলেকে ছি’নিয়ে আনার চেষ্টা করলে, উল্টো মা কিরনের উপরে হা/ম’লা চালায় ওই চিতাবাঘ। কিন্তু কিরণ একটি লাঠি দিয়ে চিতার মাথায় আ’ঘা/ত করতেই মা এবং তার ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে অন্ধকারে মিলিয়ে যায় চিতাবাঘটি। পরে আহত অবস্থায় তার সন্তানকে উদ্ধার করেন কিরণ।
এই ঘটনার বিষয়ে মা কিরণ জানান, হঠাৎ করে একটি ঝোপের আড়াল থেকে চিতাবাঘটি বেরিয়ে এসে রাহুলকে মুখে কামড়ে ধরে নিয়ে জঙ্গলের দিকে ছুটতে থাকে। এরপর প্রায় এক কিলোমিটার ওই চিতার পেছনে পেছনে ছোটেন মা কিরণ। একসময় রীতিমতো ল’ড়াই করেই তার কাছ থেকে ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয় তার ছেলেকে।