ভাগ্য অনেকের জিবনে নানাভাবে পরিবর্তন ঘটায় কখোনো দেখা যায় শুন্য থেকে কাউকে শির্ষ অবস্থানে আবার শির্ষ অবস্থান থেকে একেবারে ফুটপাতেও চলে আসে তবে এমন ধরনের ঘটনা ঘটেছে অনেক যেমনটি বাগেরহাটে এক যুবকের ক্ষেত্রে ঘটেছে। নিঃস্ব কৃষক পরিবারে জন্ম নিয়েও শুধুমাত্র মেধা আর পরিশ্রম দিয়ে জীবন বদলের অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশের তরুণ মিজানুর রহমান খান। যাকে একদিন লেখাপড়ার খরচ মেটাতে খিচুড়ি বিক্রি করতে হয়েছিল; বর্তমানে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
মিজান তার অনন্য জীবন সংগ্রামের জন্য ব্রিটিশ রাজপরিবার কর্তৃক স্বীকৃত।
পানগুছি নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ গ্রামের প্রান্তিক কৃষক সিদ্দিকুর রহমানের পরিবার।
চার সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে মিজানুর রহমান খান কর্নিয়ার টিস্যু নষ্ট হয়ে পড়ায় পড়ালেখায় ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারেননি। এই দরিদ্র বাবা কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি যে তিনি তার ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। কিন্তু মিজানের গল্প রূপকথাকেও হার মানায়!
বাবা-মায়ের কষ্ট দূর করে আত্মপ্রতিষ্ঠার বীজ বপন শুরু করেন মিজান। তার হাত ধরে আমবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই জরাজীর্ণ শ্রেণি কক্ষে।
তিনি গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা কলেজে ভর্তি হন, তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পাস করেন এবং বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। আর্থিক সমস্যার কারণে, তিনি তার কলেজ জীবনে এমনকি তার সহপাঠীদের দেওয়া পটকা খেয়ে ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন।
‘হে দারিদ্র, তুমি আমাকে মহান করেছ’- নজরুলের কবিতা, মিজানের গল্পের মতো- ৫০ হাজার পাউন্ডের প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপ নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছেন।
সমাজসেবা এবং শিক্ষামূলক কাজে অংশগ্রহণ এবং দক্ষতার বিকাশের মাধ্যমে আত্ম-পরিবর্তনের স্বীকৃতিস্বরূপ, ডিউক অফ এডিনবার্গ আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রোগ্রামের অধীনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্মান পেয়েছেন।
মিজানের এই অর্জন বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে বলে মনে করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ক্লাব ইউকে-এর গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য বিধান গোস্বামী।
মিজান ফলিত ভাষাবিজ্ঞান এবং দ্বিতীয় ভাষা অর্জনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে আসছেন, তাই আজ মিজানের গর্বিত পিতামাতারা সবচেয়ে খুশি।
প্রসঙ্গত, মানুষ পরিশ্রম করে সাফল্যের সিড়িতে উঠে এবং কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষ পরিশ্রম করেও সাফল্য আনতে পারে না তবে সর্বপোরি পরিশ্রমের কোন বিক্ল্প নেই, পরিশ্রম আর অধ্যাবসয় দুয়ে মিলেই কাঙ্খিত সফলতা নিয়ে আসবে কখোনো না কখোনো