ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয়ে বিএনপি কার্যালয়ে ইংরেজিতে বক্তৃতা করা মিয়া আরাফিকে দলের নেতারা শিখিয়ে এনেছিলেন।
রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
হারুন বলেন, বিমানবন্দর থেকে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে বিএনপি নেতারা নিয়ে এসেছেন। সে সব স্বীকার করেছে। তিনি একজন প্রবাসী।
মিয়া আরাফির বরাত দিয়ে হারুন আরো বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের উৎসাহ দিতে আরাফি ভুয়া নাটক সাজানো হয়। তাকে যে কথাগুলো বলতে বলা হয়েছিল বিমানবন্দরে সে কথাগুলোই তিনি বলেছেন। আসলে এসব কথা তাকে বলানো হয়েছে।
এর আগে রোববার বিকেলে ইমিগ্রেশন পুলিশ আরাফিকে আটক করে ডিবির কাছে সোপর্দ করে।
জানা যায়, আরাফির ডাক নাম বেল্লাল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে থাকেন। তিনি একজন বাংলাদেশী আমেরিকান। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা।
২০২৩ সালে দ্বিতীয়বার ঢাকায় আসেন আরাফি। এর আগে ৫ মাস অবস্থান করেন। তিনি বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক। বাংলাদেশী পাসপোর্ট নেই। তার কাছে শুধু মার্কিন পাসপোর্ট আছে। বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে ছিলেন।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সঙ্গে আরাফির সংবাদ সম্মেলনের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।
মার্কিন দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির সমাবেশ ও সং/ঘর্ষের আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে মার্কিন দূতাবাস এ খবর অস্বীকার করেছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তবে এর আগে বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে ব্রিফিংয়ের খবর ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওটিতে নিজেকে মিয়া আরাফি বলে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ কয়েকজনকে বার্তা পাঠিয়েছেন বলে তথ্য প্রকাশ করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন থাকলেও প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর বিএনপির টনক নড়ে।
রাতে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে যিনি কথা বলেছেন তার কোনো তথ্য বিএনপির কাছে নেই। মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তির বিষয়ে বিএনপিকে জানানো হয়নি বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
বিএনপি ওই ব্যক্তি সম্পর্কে অবগত না থাকলেও কীভাবে তিনি দলীয় কার্যালয়ে এসে বক্তব্য দেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র এই ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, ‘ওই ভদ্রলোক মার্কিন সরকারের পক্ষে কথা বলেন না। তিনি একজন বেসরকারি ব্যক্তি।