ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রচারের ঘটনা নতুন নয়। তবে ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের পর থেকে এসব ভুয়া খবরের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। কখনো দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে, কখনোবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ঘিরে নানা রকম ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এবার ভারতীয় গণমাধ্যমের এমন ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণমাধ্যমের দেশ, যেখানে ৫০০টিরও বেশি স্যাটেলাইট চ্যানেল এবং ৭০টির বেশি সংবাদভিত্তিক চ্যানেল রয়েছে। পাশাপাশি ৭০ হাজারের বেশি সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। কিন্তু এত বিশাল মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি থাকার পরও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম অপসাংবাদিকতার জন্য বেশ কুখ্যাত। এর বড় উদাহরণ বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের অতিরঞ্জিত ও মনগড়া সংবাদ প্রচার।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে একের পর এক ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এসব ভুয়া খবর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। ১১ মার্চ সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর আইএসপিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস ও ইন্ডিয়া টুডের মতো কয়েকটি মাধ্যম পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এসব প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভেদ, বিশৃঙ্খলা ও অভ্যুত্থানের মতো মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এসব সংবাদ বাস্তবতার সঙ্গে কোনোভাবেই মিল নেই এবং এটি বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে চালানো অপপ্রচারের অংশ। সেনাবাহিনী আরও বলেছে, সেনাপ্রধানের দক্ষ নেতৃত্বে বাহিনী সুসংগঠিতভাবে কাজ করছে এবং এমন গুজবের কোনো ভিত্তি নেই।
আইএসপিআর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর উদ্দেশে সতর্ক বার্তা দিয়ে বলেছে, ভালো সাংবাদিকতার নীতি মেনে চলতে হবে এবং যাচাই-বাছাই ছাড়া বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশের আগে আইএসপিআরের বক্তব্য নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।