প্রতিবছরেই দেশে বাড়ছে ধনী ব্যক্তিদের সংখ্যা। অবশ্যে দেশে দীর্ঘ সময় ধরে বিরাজ করছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। তবে এই ভাইরাসের সংকটময় পরিস্তিতির মধ্যেও দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে ধনীব্যক্তিদের সংখ্যা। সম্প্রতি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের কোটিপতিদের হিসাবে মোট আমানতের পরিমাণ তুলে ধরেছে।
চলতি বছরের প্রথম ছয়মাসে কোটিপতি ব্যাংক হিসাব বেড়েছে ৬ হাজার ২৮টি। এর মধ্যে এপ্রিল থেকে থেকে জুন মাসের মধ্যেই বেড়েছে ৫ হাজার ৬৪৬টি কোটিপতি হিসাব। জুন শেষে কোটিপতিদের হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬লাখ ৩৪ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে কোটিপতি হিসাবগুলোতে আমানত ছিল ৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
দেশের ব্যাংকগুলোতে আকস্মিক ভাবে কোটি টাকার বেশি জমা হিসাবের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিনমাসে কোটিপতি হিসাব বেড়েছে মাত্র ৩৮২টি। পরের তিনমাস অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাসেই বেড়েছে ৫ হাজার ৬৪৬টি কোটিপতি হিসাব। জুন শেষে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৯১৮টি। আর এসব হিসাবে জমার টাকার পরিমাণ ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্যাংকে কোটিপতি হিসাব ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। মার্চ শেষে কোটিপতি হিসাব বেড়ে ৯৪ হাজার ২৭২টি হয়। আর জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৯১৮টিতে। করোনা মহামারির মধ্যেও ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে ১০ হাজার ৫১টি নতুন কোটিপতি ব্যাংক হিসাব যোগ হয়। আমানত যোগ হয় ৬৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুন শেষে ব্যাংকগুলোতে ১ থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা থাকা হিসাবের সংখ্যা ছিল ৭৮ হাজার ৬৯৪টি। পাঁচ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা ব্যাংক হিসাব ছিল ১১ হাজার ১৩টি। দশ থেকে ১৫ কোটি টাকা জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ৩ হাজার ৫৯৯টি। পনেরো থেকে ২০ কোটি টাকা জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ছিল ১ হাজার ৭৩২টি। ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানত জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ছিল ১ হাজার ১৮৫টি।
এছাড়াও ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটি টাকা করে জমা ছিল ৮৩৯টি ব্যাংক হিসাবে। ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা ছিল ৪২৫টি ব্যাংক হিসাবে। ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটি টাকা করে জমা ছিল ৩১৪টি ব্যাংক হিসাবে। ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা থাকা হিসাব ছিল ৫৯০টি। ৫০ কোটি বা তার বেশি টাকা জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ছিল ১ হাজার ৫২৭টি।
সমাজে ধনী-গরীব দুই শ্রেনীর মানুষ বিদ্যমান। তবে ধনী ব্যক্তিদের নিয়ে মানুষের কৌতূহলির শেষ নেই। এরই সুবাধে প্রায় সময় ধনী ব্যক্তিদের নানা বিষয়ে প্রকাশ্যে উঠে আসে। এমনকি তাদের সম্পত্তির পরিমান নিয়েও নানা ধরনের তথ্য প্রকাশিত হয়ে থাকে।