সম্প্রতি র্যাব কর্মকান্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গু/ম, বিচার বর্হিভূত হ/ত্যসহ নানা ধরনের অভিযোগ উঠে র্যাবের উপর। র্যাবের এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে এশিয়া বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংঘঠন জাতিসংঘে চিঠি পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিত গত বছর ডিসেম্বর মাসে র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট। এবার র্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যা বললেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশ পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশকে বিস্মিত হতে দেখে যুক্তরাষ্ট্রও বিস্মিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
তিনি বলেন, অনেক বার শুনেছি বাংলাদেশ এ ঘটনায় কত বিস্মিত হয়েছে। তাদের বিস্ময় দেখে আমরাও প্রায় বিস্মিত।
শুক্রবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় মার্কিন দূতাবাসের নতুন সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র কার্লা থমাসের প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস এ মন্তব্য করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন, বাণিজ্য, দুই দেশের মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, “মানুষ র্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং চলমান সহযোগিতার কথা ভুলে যাচ্ছে, আইন প্রয়োগ, সন্ত্রাস দমন এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তায় আমাদের গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতা রয়েছে।” এছাড়াও আমরা বিচার বিভাগ, আইনজীবী এবং পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। আমরা ভবিষ্যতে এই প্রশিক্ষণ এবং অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার জন্য খুবই আগ্রহী।
র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু তারপর থেকে অনেকবার শুনেছি বাংলাদেশ কতটা অবাক। তাদের বিস্ময় দেখে আমরা প্রায় অবাক।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে র্যাবের প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দেয়। এছাড়াও, মানবাধিকার প্রতিবেদনে এবং কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই উদ্বেগগুলি উত্থাপিত হয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা আশ্চর্যজনক হলেও আমাদের উদ্বেগ নিয়ে বিস্মিত হওয়া উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস বলেন, বিষয়টি এমন হতে হবে তা আমি মনে করি না। এটি তাদের মধ্যে একটি।
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার ইস্যুসহ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যকার অন্যান্য দ্বন্দ্বের বিষয়ে একসঙ্গে বসা ও কথা বলা চালিয়ে যাওয়া দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী দেখতে চান জানিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দল বা প্লাটফর্ম বা কোনো কিছুর পক্ষে নয়। কারণ এখানে কোনো মার্কিন ভোট নেই। আমি দেখতে চাই বাংলাদেশের জনগণ একটি অবাধ, প্রতিযোগিতামূলক, অহিংস প্রক্রিয়ায় তাদের পরবর্তী নেতা নির্বাচন করবে।
জিএসপি সুবিধা পেতে বাংলাদেশ যা করার কথা তা করেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় বাংলাদেশ শ্রমিকদের অধিকার, শ্রমিক অধিকার ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশ এখনো সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি। অথচ তারা জিএসপির বাধা তুলে নিতে বলছে বারবার।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বাংলাদেশ বিস্মিত প্রকাশ করায় যুক্তরাষ্ট্রও বিস্মিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, বাংলাদেশে-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করছে। কিন্তু র্যাবের বিষয়টি নিয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ।