বাংলাদেশ ভারতের একটি প্রতিবেশী দেশ এবং সেই সাথে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু এই দেশটি নিজেদের স্বার্থে কিংবা বন্ধুত্বের কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের সাথে কতটুকু কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখছে সেটা এদেশের মানুষ অনেক বিবেচনা করে থাকে। এবার এমনই একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশটির অন্যতম
শিল্পপতি গৌতম আদানির ব্যবসায়িক স্বার্থে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির অপব্যবহার করেছেন কিনা- ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন প্রশ্ন করেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস আদানি গ্রুপের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির যোগসাজশ এবং কোম্পানির ব্যবসায়িক লাভের জন্য সরকারি নীতির ‘অপব্যবহার’ নিয়ে কংগ্রেস প্রশ্ন করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার নবম দিনে কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশের করা তিনটি প্রশ্নজুড়ে ছিল বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ রপ্তানির চুক্তি এবং যেখান থেকে তা সরবরাহ হবে সেই গোড্ডা প্রকল্প।
প্রথম প্রশ্নে, কংগ্রেস বলেছিল, ইউপিএ আমলে, ২০১০ সালে বাংলাদেশের বাগেরহাটে ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের জন্য NTPCK-এর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ক্ষমতায় এসে আপনি দুই ‘এ’ (আদানি–আম্বানি) বন্ধুর সাহায্যে ওঠেপড়ে নামেন। জুন ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরের সময়ও ঘোষণাটি করা হয়েছিল। বলা হয় যে, আদানি পাওয়ার এবং রিলায়েন্স পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে।
কংগ্রেস জানতে চায়, ‘এটা কি সত্যি যে আপনি শেখ হাসিনাকে জোর করেছিলেন সে জন্য? এমন চুক্তি মানতে জোর খাটিয়েছিলেন, এবং আদানি পাওয়ারের জন্য খুবই লাভজনক? এটাও কি সত্য যে বাংলাদেশ তার নিজস্ব প্রকল্প থেকে যে দামে বিদ্যুৎ কেনে, গোড্ডা প্রকল্প থেকে কেনা বিদ্যুতের দাম তার চেয়ে অনেক বেশি? প্রতিবেশী রাষ্ট্রের স্বার্থহানি করে বন্ধুর বাণিজ্যিক লাভ করানোই কি ভারতের পররাষ্ট্রনীতি?’
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি সংসদে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বা সরকারের তরফে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। আট দিন ধরে, বিজেপির কেউ এখনও কংগ্রেসের উত্থাপিত ২৪ টি প্রশ্নের একটিরও উত্তর দেয়নি।
প্রসংগত, ভারত ও বাংলাদেশের একটি জটিল এবং ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, সেই সময় থেকে যখন উভয় দেশ ব্রিটিশ ভারতের অংশ ছিল। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সময়ের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং অতীতে কিছু মতবিরোধ থাকলেও সামগ্রিকভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেকাংশে ইতিবাচক ছিল। তবে বর্তমান সময়ে এসে ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেকটা উন্নতি ঘটেছে।