বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) একটি বিবৃতি জারি করেছে। এ নিয়ে সমাজের বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ বিবৃতিতে বেশকিছু বিষয় ‘ত্রুটিপূর্ণ’ উল্লেখ করে সরকারের পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ওএইচসিএইচআরের অনেক বর্ণনাই বেশ ত্রুটিপূর্ণ। আসল ঘটনা বিবর্জিত। আমরা এর একটা প্রতিবাদ পাঠাব। আমরা মনে করি, তারা যথাযথভাবে অবহিত নন। তাদের তথ্যের অভাব রয়েছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের তথ্যের অভাব দুর্ভাগ্যজনক। গত মঙ্গলবার তার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, OHCHR বাংলাদেশে সঙ্কটের সময় রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে চলমান বিক্ষোভে সহিংসতার ব্যাপকতা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।” ২৮শে অক্টোবর, OHCHR ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সহিংসতায় ১১ জনের মৃ”ত্যুর খবর দিয়েছে। এত মৃত্যুর তথ্য মিথ্যা বলে জানিয়েছে সরকার। OHCHR বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে 28 অক্টোবর, সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এ ছাড়া ওই দিন আনুমানিক ৩০ জন সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়।
বিক্ষোভকারীরা ছাড়াও, এসব হামলায় বিক্ষোভকারী ছাড়াও মোটরসাইকেলে আসা মুখোশ পরা একদল ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন, যারা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঢাকার কর্মকর্তারা বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের দ্বারা সাংবাদিকদের ওপর হামলার তথ্য বাস্তবতা বর্জিত। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের বক্তব্য পক্ষপাতদুষ্ট এবং বিকৃত তথ্যের ভিত্তিতে হয়েছে।
জাতিসংঘের এই সংস্থা কোনো তথ্য যাচাই না করেই একপক্ষের কথা শুনে এই বিবৃতি দিয়েছে। তাদের বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই। বিচারপতি মানিক বলেন, বিবৃতির একটি অংশে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল আরোহী ও হেলমেট পরা কিছু লোক সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন করেছে, ধারণা করা হচ্ছে তারা সরকারি কর্মী। এখানে তারা মনে করেছে যে তারা এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ওই দিন ঢাকা শহরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল।
সিসিক্যামে সমস্ত আততায়ীর মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল, তাই কিছু ভাবার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হ”ত্যা করা হয়েছে, কে তাকে হত্যা করেছে তা সিসিটিভিতে স্পষ্ট দেখা গেছে।