বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক হচ্ছে বেশ আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর বর্তমান সমাবেশ নিয়ে প্রতিনিয়তই কথা উঠছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ। আর এ সব প্রশ্ন সেখানে তুলছেন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর বাংলাদেশী সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। পাঠকদের উদ্দেশে তার সেই স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো হুবহু:-
ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হুমকি দেবার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, “বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে লাখো মানুষ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ করছে। ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে হুমকি দিয়ে বলেছেন বিএনপি যদি আন্দোলনের নামে বেশী বাড়াবাড়ি করে তাহলে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে আবার জেলে পাঠানো হবে। ৭৭ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে শর্তারোপ করে বাসায় থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবাধিকার রিপোর্টেও বলা হয়েছে যে, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এ মামলাটা এক ধরনের ষড়যন্ত্র। এবিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?”
জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির অবস্থান স্পষ্ট করে নেড প্রাইস বলেন, “সারাবিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রনীতিতে যে দুটি বিষয়কে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয় তা হল- গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার। এবিষয়গুলো নিয়ে আমরা সবসময় প্রকাশ্যে কথা বলে আসছি।”
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারকে আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবার আহবান জানিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র বলেন, “যেসব দেশের সরকারের সঙ্গে আমরা এ ইস্যুতে কথা বলেছি তার মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র, সংবিধানকে শক্তিশালী করা, আইনের শাসন এবং সকল বাংলাদেশিদের মানবাধিকারের সুরক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছি। এর আগেও আমি একি বিষয়ে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি।আমি এখানেও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে কথা বলেছি। আবার দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ের সরকারের সাথে আলোচনার সময়ও এ বিষয়গুলো উত্থাপন করা হয়েছে। ”
তিনি বলেন, “আমাদের এই আহবান জানানোর উদ্দেশ্য হলো যাতে করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয়। যার মধ্যে রয়েছে সংবিধান, আইনের শাসনের বাস্তবায়ন, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং বাংলাদেশের সব মানুষের মৌলিক অধিকারের বাস্তবায়ন।”
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তার জানান দিতে নেড প্রাইস বলেন, “আমরা আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুশীল সমাজ এবং বাংলাদেশের জনগণের অংশগ্রহণ চাই যাতে করে তারা নিজেদের সরকারকে স্বাধীনভাবে বেছে নিতে পারে। আমরা এটাই আশা করি এবং বাংলাদেশ সরকারকে সে বিষয়টির দিকেই আহবান জানাচ্ছি।”
বিরোধী দলের ওপর চলমান নিপীড়ন থামানোর আহবান জানিয়ে নেড প্রাইস বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সরকারকে বলবো বিরোধীদলের উপর বলপ্রয়োগ বন্ধ করা এবং বাধা ছাড়া মুক্তসমাবেশের সুযোগ করে দিতে যেনো তারা তাদের উদ্বেগের কথা স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারে।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে রাজনীতির সব বিষয়ে নজরে রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট। তারা প্রতিনিয়তই বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য বাংলাদেশকে বার বার সতর্ক করে যাচ্ছে।