বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল থেকে নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেই সাথে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে হয়রানির বিষয়টি নিয়ে সরকারকে নমনীয় হওয়ার কথা জানিয়েছেন। অন্যান্য দেশের তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিষয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি হস্তক্ষেপ করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামীপন্থী রাজনৈতিক নেতারা।
এবার বাংলাদেশে বিরোধী দল বিএনপির (বিএনপি) নেতা-কর্মীদের হ”য়রানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না দেশটি। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এটিকে “রুশ প্রোপ্যাগান্ডা” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিং”/সতা এবং বিরোধী দলের নেতাদের হয়”রানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
নেড প্রাইসের ২০২৩ সালের প্রথম প্রেস ব্রিফিংয়ে, একজন সাংবাদিক সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরেন। ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করে রাশিয়া। পিটার হাসও তার কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে হয়”রানির শিকার হন। এ প্রসঙ্গে মার্কিন মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, এই ইস্যুতে আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে যা শুনেছি তা আমলে নিচ্ছি না। আমরা সাধারণত এই ধরনের অপপ্রচারে মনোযোগ দিই না। আমি আমাদের অবস্থান থেকে যা বলতে পারি তা হল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক উপস্থিতি রয়েছে এমন প্রতিটি দেশে রাজনৈতিক স্পেকট্রাম জুড়ে অংশীদারদের সাথে আমরা নিয়মিত বৈঠক করি এবং এতে অবশ্যই বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নেড প্রাইস আরো বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক সহিং”/সতা ও ভয়ভী”তি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের জনগণের মতপ্রকাশ, সমাবেশ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মৌলিক স্বাধীনতাকে সম্মান ও রক্ষা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। এসব আহ্বানের কথা আমার কাছ থেকে শুনেছেন, এই দপ্তর থেকে শুনেছেন এবং বাংলাদেশে আমাদের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকেও শুনেছেন। আমরা সারা বিশ্বে এই আহ্বান জানাবো।
ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করার সময় একজন সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশের বিরোধী দলের চেয়ারপারসন দীর্ঘদিন ধরেই গৃহবন্দী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিরোধী দলের সাধারণ সম্পাদকসহ হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র কি তাদের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান জানাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সব পক্ষকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা, সহিং”/সতা, হয়”রানি, ভয় দেখানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।” কোনো দল বা প্রার্থী যেন অন্য দল বা প্রার্থীর বিরুদ্ধে হু”মকি, উ”সকানি বা সহিং”/সতা সৃষ্টি না করে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত নির্বাচনে সব প্রার্থীকে কোনো ধরনের সহিং”/সতা, হয়”রানি বা হু”মকি ছাড়াই ভোটারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। যখন সহিং”/সতা, হয়”রানি, ভী”তি প্রদর্শন, নির্বি”চারে আটকের খবর পাওয়া যায়, তখন আমরা সরকারকে সেই প্রতিবেদনগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, স্বচ্ছভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে এবং অপরা”ধীদের জবাবদিহিতার জন্য আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নিজেদের দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশজুড়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এই দলগুলো। এদিকে নির্বাচনী ইস্যু নিয়ে মানবাধিকার লং”ঘন এবং বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।