বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ৫০ জন চিকিৎসক।সেবা দিয়েও তারা জরিমানার শিকার হয়েছেন+-। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তিনি বলেন, ৫০ বিদেশি চিকিৎসকের একটি টিমকে তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে। তারা বিনা পয়সার উন্নত চিকিৎসা শেখাবেন এবং গরিবদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেবেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশে চিকিৎসা দিতে পারেন না। তবে আমাদের বিশেষ অনুরোধে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় তারা একটি শর্তে রাজি হয়েছেন। শর্ত হলো, স্পন্সর এজেন্সিকে প্রত্যেক চিকিৎসকের বিপরীতে ১৩ হাজার টাকা ভ্যাট দিতে হবে।
তাফিদা হলো একজন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ৯ বছরের মেয়ের নাম। মেয়েটির বয়স যখন ৪ বছর ছিল, অজানা অসুখের কারণে বহু মাস অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিল। মা-বাবা মেয়েটির হাসপাতাল খরচ বহন করতে না পারায় ব্রিটিশ সরকার তার মেশিন ও ভেন্টিলেটর ডিসকানেন্ট করবে বলে ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে সারা ইউরোপে তোলপাড় হয়ে যায়।
মোমেন বলেন, ইতালি সরকার তখন শিশুটির দায়িত্ব নেয়। তাফিদা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ ও ভালো। বৃটিশ সরকার টাকার কারণে মেয়েটির ভেন্টিলেটর সরিয়ে ফেলতে চাইলে অনেকেই মেয়েটির জন্য টাকা জোগাড় করেন। সেই দাতব্যের টাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন। বাংলাদেশে এই ৫০ জন বিশেষজ্ঞ মেডিকেল ডাক্তারদের আনা-নেওয়া বাবদ প্লেনের টিকিট ভাড়া অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্স বিনা পয়সায় দিয়েছে। স্থানীয় হোটেল এদের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ ডিসকাউন্ট দিচ্ছে। তবে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) একমাত্র ব্যতিক্রম।
এই বিদেশী ডাক্তারদের দেশের যেকোন হাসপাতালে বিনামূল্যে রোগীদের দেখা বা সেবা করা বা প্রদর্শনী শিক্ষাদানের অপারেশন করা নিষিদ্ধ। যাইহোক, কয়েক বছর আগে রোকেয়া এবং রাবেয়া নামে দুটি সিয়ামিজ শিশুর সফলভাবে আমাদের সামরিক (CMH) হাসপাতালের সহযোগিতায় হাঙ্গেরির সরকার দ্বারা চিকিত্সা করা হয়েছিল। এতে প্রায় ১৩৯ জন (বাংলাদেশি ও বিদেশি) চিকিৎসক ও সহযোগীরা কাজ করেন। বিএমডিসির কাছ থেকে তখন কোনো অনুমোদন নিতে হয়নি। কোনো চার্জ বা জরিমানা দিতে হয়েছে বলে শুনিনি। বর্তমানে হাঙ্গেরি ও বাংলাদেশের মধ্যে খুবই ঘনিষ্ঠ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সক্রিয় উদ্যোগে রোকেয়া রাবেয়ার কাহিনী উভয় দেশে বহুল আলোচিত। শুধু তাই নয়, রোকেয়া-রাবেয়ার সম্পর্কের পথ ধরে আমার অনুরোধে হাঙ্গেরি সরকার বাংলাদেশের ১৫০ ছাত্রছাত্রীকে ফুল স্কলারশিপ দিচ্ছে। রোকেয়া-রাবেয়ার কারণে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে আমার এখন একান্ত বন্ধু, বলেন মোমেন।
ইউরোপের তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশের প্রাইভেট হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশন এবং আরটিএম ইউনিভার্সিটি উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য সহযোগিতার ব্যবস্থা করলেও তাদের উৎসাহিত করার পরিবর্তে বিএমডিসি তাদের জরিমানা করে। এটা অস্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা আশা করি বিএমডিসি প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করবে।