নতুন সরকার নির্বাচনের জন্য রোববার ভোট দেবে বাংলাদেশের মানুষ। তবে এবারের নির্বাচনে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। কারণ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খুব কমই বিরোধী দলকে কাজ করতে দেয়। দুর্ভাগ্যবশত, প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ওয়াজেদের প্রশাসন মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের সমালোচনামূলক কণ্ঠকে দমন করার পাশাপাশি সমস্ত বিরোধী শক্তিকে দমন করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও নোবেল বিজয়ী ও বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ‘খারাপ বইয়ে’ রয়েছেন। সোমবার, তিনি তার টেলিকম ফার্মে ‘শ্রম আইন লঙ্ঘনের’ জন্য দোষী সাব্যস্ত হন। শতাধিক মামলার মুখোমুখি ইউনূস সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন যে এটি দোষী সাব্যস্ত ব্যাংকারের পূর্বের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার ফলাফল। এদিকে, প্রধান বিরোধী শক্তি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিরুদ্ধে দমন অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেড়ে নেওয়া হয় হাজার হাজার দলীয় কর্মী-সমর্থককে। নিরাপত্তা যন্ত্র তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে এই ভয়ে অনেকেই আত্মগোপনে থাকে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পর্যবেক্ষক গঠনের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
সরকার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর দলটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। জাতিসংঘের কর্মকর্তাসহ বিদেশী সরকার এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা এই ক্র্যাকডাউন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের প্রশাসনে কোনো প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি এই অঞ্চলের গণতন্ত্রের জন্য বৃহত্তর হুমকির প্রতিফলন। পাকিস্তানে নির্বাচনী চর্চা নিয়েও একই ধরনের বৈধতার প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে ভারতে নির্বাচনও কয়েক মাসের মধ্যে। গণতান্ত্রিক সংকটও রয়েছে। কারণ বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুত্ববাদীরা সে দেশে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক নীতিকে বারবার আক্রমণ করেছে। নব্বই দশকের শুরুতে দীর্ঘ সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথে হাঁটতে শুরু করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের কারণে বাংলাদেশ একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে। অনেক দেরি হলেও আগামী নির্বাচন বাঁচাতে শেখ হাসিনা ও তার দলকে তাদের পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। কারণ সকল বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর হস্তক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশী গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং সমাজে ফাটল বাড়িয়ে দেবে।