বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়েছেন। শনিবার (৩০ নভেম্বর) আগরতলা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মানিক সাহা বলেন, “ত্রিপুরা সরকার এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।”
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নিপীড়নের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেড়েছে। পরিস্থিতির উন্নতির কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে মানিক সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেদিনই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়েছেন, সেদিনই আমরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। আমি বিএসএফ কর্মকর্তা ও পুলিশের মহাপরিচালকের সঙ্গে কয়েকবার বসে ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছি।’
এদিকে, বিজেপির আরেক নেতা শুভেন্দু অধিকারীও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বিগত বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৩০ দশমিক ২৪ কোটি রুপি, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে ৭১৫ দশমিক ৯৮ কোটি রুপিতে পৌঁছেছে। তবে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় আমদানির পরিমাণ তুলনামূলক অনেক বেশি।
ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হওয়া প্রধান পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ভাঙা পাথর, ভুট্টা, আগরবাতি, আদা, শুকনো মরিচ এবং সবজির বীজ। অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় মাছ, সিমেন্ট, খাদ্যপণ্য, স্টিল, পিভিসি পাইপ এবং কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করা হয়।
ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর এই হুমকি কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে উভয় দেশের ব্যবসায়ী মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।