বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। বিশ্বে বাংলাদেশ শান্তিপূর্ন দেশ হিসেবে খুবই সুপরিচিত। সর্বক্ষক্ষেত্রে শান্তি বজায় রাখাই হলো এদেশের মানুসের অন্যতম নৈতিক একটি গুণ। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার মানুষ ও জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমান সীমাহীন আত্মত্যাগের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন করে গিয়েছেন। তিনি ছিলেন বাংলা মায়ের বীর সন্তান। সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস তার এক বক্তব্যে বলেছেন শান্তি টিকিয়ে রাখা সবার দায়িত্ব।
ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস বলেন, শান্তি বজায় রাখা প্রত্যেকের দায়িত্ব এবং এ জন্য সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসে’ বাংলাদেশে জাতিসংঘ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সার্বজনীন এবং এখনও প্রাসঙ্গিক বাণী উদ্ধৃত করতে চায়। সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘মানবজাতির বেঁচে থাকার জন্য শান্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি সমগ্র বিশ্বের নারী-পুরুষের গভীর আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে। ‘
বাংলাদেশ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শান্তির জন্য জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতিসংঘ বাংলাদেশকে তার প্রচেষ্টায় সমর্থন করতে পেরে আনন্দিত।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সহিংসতা প্রতিরোধ জাতিসংঘ সনদের মূল বিষয়। গত ৪১বছর ধরে প্রতি বছর, জাতিসংঘ শান্তির আদর্শকে তুলে ধরতে এবং সহিংসতাহীন একটি দিন কাটাতে আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উদযাপন করে।
সহিংসতা প্রতিদিনই সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে এবং আর্থ-সামাজিক অনিশ্চয়তা বৈশ্বিকভাবে সংহতি বিনষ্ট করছে। এই অবস্থায় সব ধরনের বিভেদ, বিভক্তি আর সীমান্তকে পাশ কাটিয়ে শান্তিকে প্রাধান্য দিতে শান্তি দিবস-২০২২ সব দেশের সরকার ও জনগণকে সুযোগ করে দিয়েছে। এটি আমাদের থামতে, এবং শান্তির অন্তর্নিহিত অর্থ অনুধাবন এবং তা বিনির্মাণ ও টেকসই করার কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে ভাবতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বর্ণবাদ বন্ধ করুন, শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন’। এই নীতিবাক্য আমাদের সকলকে মনে করিয়ে দেয় যে শান্তি বন্দুকের গর্জন বন্ধ করার চেয়ে বেশি কিছু। এর অর্থ হল এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা যেখানে ধর্ম-বর্ণ-পরিচয়-লিঙ্গ পরিচয়-মতামত-রাজনৈতিক মতাদর্শ-শারীরিক চাহিদা নির্বিশেষে সবাইকে সমানভাবে বিবেচনা করা হয় এবং শ্রেষ্ঠত্বের সমান সুযোগ দেওয়া হয়। শান্তির জন্য সরকার এবং জনগণ এবং সমাজের মধ্যে মূল্যবোধ এবং সামাজিক সম্প্রীতির একটি ভাগ করা দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৬ ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ন্যায়বিচার, শান্তি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠা’ অ্যাজেন্ডা ২০৩০- এর অপরিহার্য অংশ। টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত অনুষঙ্গ শান্তি এবং উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে সংঘাত ও সহিংসতার কারণ ও চলকগুলো চিহ্নিত করতে সহযোগিতা করতে পারে। অপরদিকে যেকোনো ধরনের সহিংসতা উন্নয়নের গতিকে বিপরীতমুখী করে দেয়।
শান্তিকে কখনই দানে পাওয়া বিষয় হিসেবে নেওয়া উচিত নয়। শান্তি বজায় রাখা এবং সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং বিনিয়োগ প্রয়োজন। এটা করা বুদ্ধিমানের কাজ। শান্তি বজায় রাখা প্রত্যেকের দায়িত্ব এবং প্রত্যেকের ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনার পরিবার, সমাজ, দেশ ও বিশ্বের শান্তির জন্য আপনার ভূমিকা কী?
প্রসঙ্গত, শান্তি হলো অন্যরকম একটি বিষয়। শান্তি হলো জীবনের পরম একটি প্রাপ্তি। যেখানে শান্তি নাই সেখানে কোনো কিছুই ভালো আশা করা যায় না। যেখানে মানুষ শান্তি নামক জিনিসটারই মূল্য বুঝে না ,সব সনয় হানাহানিতে ব্যস্ত থাকে সেখানে অমঙ্গল ছাড়া আর কিছুই কামনা করা যায় না বলে মনে করেন অনেকেই।