বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাব মান অনুযায়ী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা ১৯ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। আর মোট রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৪৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার বা ২৪ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।
এর বাইরে, ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে। ব্যবহারযোগ্য বলতে সব দায়দেনা বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে থাকা ব্যবহার করার মতো রিজার্ভ।
চলতি মাসের শুরু থেকেই রেমিটেন্সের গতি ভালো ছিল। ফলে চলতি মাসে আড়াই হাজার কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা। তারা বলেন, বৈধ মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসার পেছনে সচেতনতা কাজ করছে। বৈধ পন্থায় ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা হুন্ডির প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এতে বাড়ছে রেমিট্যান্স আসার গতি।
উল্লেখ্য, রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিদেশে কর্মরত প্রবাসীরা দেশে যে অর্থ পাঠান, তা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ায়। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। রেমিট্যান্স অর্থনীতির এক বিশাল উৎস হিসেবে কাজ করে, যা সরকারের নীতিনির্ধারণ এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
এছাড়া, প্রবাসীরা তাদের পরিবারের জন্য যে অর্থ পাঠান, তা সরাসরি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে। এই অর্থ খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তায় ব্যয় করা হয়, যা দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা বৃদ্ধি করে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসে এবং বাজারের পণ্যের বিক্রয় বাড়ে।
প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশে বিনিয়োগ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। অনেক প্রবাসী দেশে জমি কেনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বিনিয়োগ করেন, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়া, এই অর্থ দরিদ্র পরিবারের জীবনে উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করে, যা দেশের দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
সবমিলিয়ে, রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখে।