বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ক্রমশই এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের দিকে। ইতিমধ্যে উন্নয়নের এই অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ অর্জন করেছে বিশেষ স্বীকৃতি। এমনকি সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উন্নীত হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশের এমন উন্নয়ন দেখে প্রশংসা করলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। এমনকি দিলেন এক ভিডিও বার্তা।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এব গণতন্ত্রের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। সর্বাঙ্গীণ সামাজতন্ত্রের আধুনিকায়নে চীন ও বাংলাদেশের অবস্থান একই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায় এসব কথা বলেছেন চীনা রাষ্ট্রদূত। ৩ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওবার্তায় যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত গণতন্ত্র সম্মেলনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন লি জিমিং। তিনি বলেছেন, তড়িঘড়ি করে যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত তথাকথিত গণতন্ত্র সম্মেলন বেশ ধুমধাম করে ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ যখন এ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তখন চীন অন্য একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে: প্রকৃত গণতন্ত্র কী? যুক্তরাষ্ট্র কি গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করার যোগ্যতা রাখে? আর কীভাবে একটি গণতন্ত্রকে বাস্তবায়ন এবং মূল্যায়ন করতে হবে?
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে প্রায়ই সংকীর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা হয় যে, শাসক দলের পরিবর্তন হচ্ছে কিনা। তবে চীন বিশ্বাস করে, একটি দেশ গণতান্ত্রিক কিনা তা নির্ভর করে তার জনগণ সত্যিকার অর্থে সে দেশের মালিক কিনা তার ওপর। জনগণকে যদি শুধু ভোট দেওয়ার জন্য জাগানো হয়, কিন্তু তারপরেই আবার তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়; যদি প্রচারণার সময় তাদের নাচ-গান দেওয়া হয়, কিন্তু নির্বাচনের পরে তাদের কোনো বক্তব্য না থাকে; অথবা যদি ভোট চাওয়ার সময় তাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়, কিন্তু নির্বাচনের পরে তারা উপেক্ষিত হন, এমন গণতন্ত্র অবশ্যই প্রকৃত গণতন্ত্র নয়। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা যদি ‘গণতন্ত্র’ শব্দটির গ্রিক উৎস দেখি, এর অর্থ পাই ‘জনগণের শাসন’। সুতরাং, একটি দেশ গণতান্ত্রিক কিনা তা বিচার করবে সে দেশের জনগণ, বাইরের কোন নিজস্ব-শৈলীর বিচারক নয়। একইভাবে, বিশ্ব যেহেতু বৈচিত্র্যময়, তাই একঘেয়ে দৃষ্টিকোণ থেকে সম্বৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং মানবজাতির বিভিন্ন সভ্যতাকে বিচার করতে একই মাপকাঠি ব্যবহারের বিষয়টি নিজেই অগণতান্ত্রিক।
তিনি বলেন, সর্বাঙ্গীণ সামাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণের পথে চীন গণতন্ত্র বিকাশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশের গল্পটিও এক। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে দেশটির ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, যদি কোনো দেশে ব্যাপক জনসমর্থনযুক্ত সরকার থাকে, আর তা যদি গণতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃত না হয়, তাহলে হয়তো গণতন্ত্রের সংজ্ঞাই পুনর্মূল্যায়ন করার অথবা এই সংজ্ঞার পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে। আপনার কি তাই মনে হয় না?
বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রগতি দেখে বিশ্বের অনেক দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এমনকি ইতিমধ্যে বিশ্বের বেশ কিছু দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করার লক্ষ্যে নানা বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন চীন। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে চলমান অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজেও চীনের অগ্রনী ভুমিকা রয়েছ।