Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / opinion / বাংলাদেশের পাসপোর্ট আইনে সরকারকে ক্ষমতা দেয়া হয়নি: ড. শাহদীন

বাংলাদেশের পাসপোর্ট আইনে সরকারকে ক্ষমতা দেয়া হয়নি: ড. শাহদীন

প্রতি ৫ বছর অন্তর অন্তর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে দেশের সরকার প্রধান গঠিত হয়ে থাকে। তবে প্রায় সময় সরকারের সমালোচনা করে থাকে অনেকেই। এবং বিদেশে থেকে অনেক প্রবাসী সরকারের সমালোচনা করে নানা ধরনের কথা বার্তা বলে থাকে। এরই সূত্র ধরে ঐ সকল প্রবাসীদের পাসপোর্ট বাতিলের প্রশ্ন উঠে থাকে। সম্প্রতি এই বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের বিধান সম্পর্কে বেশ কিছু কথা তুলে ধরলেন বিশেষজ্ঞরা।

সরকার বিরোধী অপপ্রচারের সাথে রাষ্ট্রদ্রোহের সম্পর্ক কি? কেউ কেউ মনে করেন যে প্রবাসীরা সরকারের সমালোচনা করছে এবং অপবাদ ছড়াচ্ছে তারা দেশদ্রোহী। আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিও মতামত দিয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশে বসে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১৫ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিদেশে সরকারের সমালোচনাকারী প্রবাসীদের কর্মকাণ্ড নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বিদেশ থেকে অনেকেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। তাই এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। প্রশ্ন হচ্ছে, আইনগতভাবে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কি এই সুপারিশ করতে পারে? বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. এটা বৈধ হবে না বলে মনে করেন শাহদীন মালিক। কারণ বাংলাদেশের পাসপোর্ট আইনে সরকারকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। সেজন্য যাদের পাসপোর্ট বাতিল করতে চায় তাদের কারণ যুক্ত করে নতুন আইন করতে হবে সরকারকে। তারপরেও প্রশ্ন থাকবে। ধরুন একজন ব্যক্তি আমেরিকায় আছেন। তার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তখন সে কোথায় যাবে? তখন সে রাষ্ট্রহীন হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক আইনে কাউকে রাষ্ট্রহীন করা যাবে না। এটা করা হলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

শাহদীন মালিক বলেন, আমরা কথায় কথায় দেশদ্রোহিতার কথা শুনছি। সাধারণভাবে বলতে গেলে, কেউ যদি বৈধভাবে ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তা হবে রাষ্ট্রদ্রোহের সামিল। বিদেশে বসে কথা বলছে কিভাবে তাদের দেশদ্রোহী বলা যায়। কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বিচারের প্রয়োজন নেই। এটি তখন বিচারবহির্ভূত বিচারে পরিণত হয়। তিনি বলেন, পাসপোর্ট এবং নাগরিকত্বের মধ্যে বিস্তৃত ব্যবধান না বোঝার কোনো কারণ নেই। ১৭ কোটি মানুষের দেশে হয়তো ৫ কোটি মানুষের পাসপোর্ট আছে। বাকিরা কি তাহলে তাদের নাগরিকত্ব হারাবে? এটা কখনো হতে পারে না, হয় না। কারণ পাসপোর্ট একটি ভ্রমণ দলিল। কোনো কারণে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে কি তিনি নাগরিকত্ব হারাবেন? তার ভাষায়- আমরা অনেক অযৌক্তিক জিনিস দিয়ে সময় নষ্ট করছি। সর্বোপরি, কাউকে রাষ্ট্রহীন করা যায় না। তবে এটাও সত্য যে, মৌলিক অধিকারের নামে কোনো ব্যক্তি যা বলতে পারে না তা অপছন্দ করলে তাকে বি/শ্বা/স/ঘা/তক বলে বিচার করা যায় না।

দেশ পরিচালনায় যাবতীয় আইন-কানুন সংবিধানে উল্লেখিত থাকে। দেশের সরকার প্রধান এই সকল নিয়ম-নীতির মধ্যে দিয়ে দেশ পরিচালনা করে থাকেন। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেশ বিরোধী নানা অভিযোগ উঠে থাকে সরকারের বিরুদ্ধে।

About

Check Also

আগামীকাল ঢাকায় বড় কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা, আপাতত যানবাহন তল্লাসি করুন: ইলিয়াস হোসেন

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন, যারা সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে রয়েছে, পরিকল্পিতভাবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *