Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে যে পাঁচটি বার্তা দিল ভারত

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে যে পাঁচটি বার্তা দিল ভারত

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দুই দেশ একমত হতে পারেনি বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের পাঁচটি অবস্থান খুব স্পষ্টভাবে সরাসরি বলা হয়েছে এবং ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে তারা কোনোভাবেই এই পাঁচটি অবস্থান থেকে বিচ্যুত হবে না। বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের পাঁচটি স্পষ্ট বক্তব্যের মধ্যে রয়েছে:

১. তারা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গতিশীল এবং আরও এগিয়ে নিতে চায়: ভারত মনে করে যে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো হয়েছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুই দেশ পারস্পরিক অবিশ্বাস ও অস্বস্তি কাটিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ জায়গায় এসেছে। ভারত বরাবরই মনে করে যে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক উভয় দেশের স্বার্থের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নরেন্দ্র মোদি সরকার এই নীতিতে প্রথম কাজ করেছে। আর এ কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ধারাবাহিকতা নিয়ে ভারত কোনো ছাড় দেবে না।

২. বাংলাদেশে নির্বাচন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: ভারত মনে করে বাংলাদেশে নির্বাচন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেই নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করবে সেটা সে দেশের রাজনৈতিক বিষয়। তবে, ভারত একমত যে বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত এবং এই নির্বাচনে জনগণের মতামতের প্রতিফলন হওয়া উচিত। ভারত এটাই প্রত্যাশা করে।

৩. বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অতিমাত্রায় উদগ্রীব: ভারত সুস্পষ্টভাবে মনে করে যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা করেছে তা অতিরিক্ত এবং বাড়াবাড়ি। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপের বিষয়, যেটি ভারত কখনও চায় না এবং ভারতের প্রত্যাশিত নয়।

৪. বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান নেই: ভারত সবসময় মনে করে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতা না থাকলে দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতার উত্থান ঘটবে। এটা ভারতের জন্য বিপজ্জনক। ভারত অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছে যে, যখনই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি ক্ষমতায় এসেছে, তখনই তারা ভারতের অখণ্ডতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার জন্য সমর্থন, পৃষ্ঠপোষকতা ও ষড়যন্ত্র করেছে। এই প্রসঙ্গে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ভারতের অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত। ভারত কখনই বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি চায় না এবং হতে দেবে না।

৫. বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব: ভারত মনে করে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেতৃত্ব বাংলাদেশে নাই এবং এই নেতৃত্ব এই মুহুর্তে না থাকার কারণে তার বিকল্প নাই। এ কারণে তারা বাংলাদেশের স্বার্থেই শুধু নয়, এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা এবং অখণ্ডতার স্বার্থে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি আস্থাশীল। তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, কিন্তু একই সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকার অব্যাহত রাখার বিষয়টিও স্পষ্ট করে। ভারত মনে করে, শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা দল ক্ষমতায় এলে দুই দেশের সম্পর্ক শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তিরও উত্থান ঘটবে। ভারত এটা কখনই হতে দেবে না।

About Nasimul Islam

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *