বাংলাদেশে গত ১৬ বছরে কোনো বৈধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার উচিত বাংলাদেশ সরকারকে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানানো। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস পার্লামেন্টে উত্থাপিত ‘নোটিস অব মোশন’-এ এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির গ্রিনস পার্টির এমপি অ্যাবিগেল সেলিনা বয়েড।
অ্যাবিগেল বয়েডের অফিসে নীতি ও সংসদীয় উপদেষ্টা পেরেজ কামুর পাঠানো একটি ভিডিওতে এমপিকে বলতে শোনা যায়:
১. এই সংসদ যেনো আমলে নেয় যে:
এ. বাংলাদেশে গত ১৬ বছরে কোনো বৈধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। যার মধ্যে রয়েছে গত ০৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সবচেয়ে সাম্প্রতিক নির্বাচন যার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবার এবং সবমিলিয়ে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় রয়েছেন।
বি. ২০২৩ সালে বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দসহ গণতন্ত্রের অধিকারের জন্য (লড়াই করা) হাজার হাজার গণতন্ত্রপন্থী কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
সি. ০৭ জানুয়ারির নির্বাচনটি বাংলাদেশের ১২তম সাধারণ নির্বাচন। এতে উল্লেখযোগ্যভাবে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। বিরোধী এবং গণতন্ত্রপন্থী কর্মীদের দুই দিনের সাধারণ ধর্মঘট এবং বয়কটের মধ্যে এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনেকের যুক্তিতে নির্বাচনটি ছিল সম্পূর্ণ একতরফা।
ডি. প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের মতে, এই নির্বাচনে সামগ্রিকভাবে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪০% এর কম। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যেখানে ৮০% এরও বেশি ভোটার উপস্থিতি ছিল।
ই. অস্ট্রেলিয়ার সরকার বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাত জানুয়ারির নির্বাচন এমন এক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে সকল মানুষ অর্থপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্যভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন নি৷ বিবৃতিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। এতে উল্লেখ করা হয় যে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন এমন একটি পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে সকল মানুষ অর্থপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্যভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। বিবৃতিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
২. এই সংসদে যেন-
এ. বাংলাদেশে সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলি যে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়েছিল তার জন্য গভীর হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে৷ এটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় যাতে সকল বাংলাদেশি অবাধে এবং গণতান্ত্রিকভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে।
বি. বিশ্বজুড়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আহ্বান জানানো এবং রাজনৈতিক নিপীড়ন, দমন-পীড়ন ও সহিংসতাযর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত সকল মানুষের সাথে সংহতি দেখানোর দায়িত্ব অস্ট্রেলিয়ার রয়েছে।
অ্যাবিগেল বয়েড এমপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বক্তব্য পোস্ট করেছেন এবং ‘ডেমোক্রেসি নাউ ফর বাংলাদেশ’ স্লোগান যুক্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ‘এটা সত্যিকারের নির্বাচন নয়’ মন্তব্য করে বলেন, ‘বাংলাদেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
তবে এটা প্রকৃত নির্বাচন নয়। আমাদের অবশ্যই বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এটি বিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য এটি একটি বিশাল বছর। লাইনে অনেক কিছু আছে।”