আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তারা এ বিষয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত হয়েছেন। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে বিপজ্জনক কিছু ঘটবে না বলে আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, তবে তারা (জাতিসংঘ) কোনো নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র কাদের ভিসা দেবে; না দেওয়া তাদের এখতিয়ার। ভিসা নীতিমালার আওতাভুক্তদের কোনো তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেনি। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভিসা নীতিমালা প্রয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রে কারা নিষিদ্ধ হয়েছে তা জানা যায়নি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভিসা নীতিমালা নিয়ে তারা চিঠির মাধ্যমে আমাদের কিছু বলেননি।মার্কিন ভিসানীতির একটা বড় তালিকা বিভিন্ন মাধ্যমে আসছে। এটা কী রিউমার হচ্ছে নাকি সত্য? আদৌ সরকারের কাছে কোনো তালিকা আছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, আমরা শুনেছি। তারা চিঠি দিয়ে আমাদের জানায়নি। তাই আমরা যা শুনি তা আমরা জানি। এখন পর্যন্ত কাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা আমরা জানি না।
মন্ত্রী বলেন, যে তালিকা দেওয়া হয়েছে তার ভিত্তি আমার জানা নেই। আমি কিছুই জানি না বলে আমি মনে করি আমার কাছে মন্তব্য করার কোনো ক্ষমতা নেই। ভিসা নীতি প্রণয়নের দায়িত্ব তাদের। তারা কাকে তাদের দেশে প্রবেশ করতে দেবে এবং কাকে দেবে না তা নির্ধারণ করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভর করে। সেখানে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই, বলার কিছু নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ফেরত পাঠানোর জন্য যথাযথ উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিকারী দায়ী বা জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন যে ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়গুলির মধ্যে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ভিসা নীতির আওতায় থাকা ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করেনি। ম্যাথিউ মিলারের বিবৃতি অনুযায়ী, নিষিদ্ধ ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। এছাড়াও, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অন্যান্য ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে।
এর মধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আজকের পদক্ষেপটি সুষ্ঠু ও অবাধ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের লক্ষ্যের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
পররাষ্ট্র দফতর থেকে বিবৃতি প্রকাশের পর শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাস থেকেও বিবৃতি দেওয়া হয়। দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান চিলার সেই বিবৃতিতে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ঘোষণার প্রতিধ্বনি করেছেন। চলতি বছরের ২৪ মে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করার লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেন।