বাংলাদেশের জন্য নতুন বার্তা দিলো আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘ। জানা গেছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মানবপাচারের শিকারদের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মানবপাচার বিষয়ক বিশেষ দূত স্পেশাল রেপোর্টিয়র সিয়োভান মুলালী।
গার্হস্থ্য যৌ’ন’তা’, শি’শু’শ্র’ম এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সুরক্ষা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রদায়ের অধিকার। দেশের অভ্যন্তরীণ প্রেক্ষাপটে জনগণের বড় জোট ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রেফারেন্স লঙ্ঘন করছে এবং মিত্র ও অভিভাবকদের ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশ সিওভান মুলালি ৩১ শে অক্টোবর ১০ নিরাপত্তা সফরে। ঢাকা অফিসে শান্তিপূর্ণ হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তার সফরের প্রতিবেদন। বাংলাদেশ সফরে তিনি ঢাকা, কক্সবাজার মনে শিবির ও সিলেট সফর করেন। পাচারের শিকার এবং ঝুঁকিতে থাকতে তিনি নিয়মিত ‘শেয়ার হোম’ পরিদর্শন করতেন।
২০২৩ সালের জুনে, বিশেষ প্রতিনিধি সিওবান মুলালি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশ সফরের একটি বিশদ প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন। বৃহস্পতিবার বিশেষ দূতের ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সিওবান মুলালী বলেন, বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার বন্ধে জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাচারের শিকারদের অবশ্যই বৈষম্যের ঊর্ধ্বে উঠে সহযোগিতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে শিশু পাচার একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি।
শিশু সুরক্ষা ও জন্ম নিবন্ধনের ব্যবস্থা বাড়ানোর মাধ্যমে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, জলবায়ুজনিত ক্ষয়ক্ষতিসহ দেশের অভ্যন্তরে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে যারা বাস্তুচ্যুত হয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে নারীদের যৌন হয়রানি এবং শিশুদের ক্ষেত্রে জোরপূর্বক শ্রমের ঘটনা ঘটে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে যৌনকর্মীরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। পথশিশুরা সুরক্ষিত নয়, তাদের বাধ্য করা হয় জোরপূর্বক শ্রমে। এসব ঘটনা উদ্বেগের। এই অবস্থার উন্নতির জন্য জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অঞ্চলে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। উচ্চ দারিদ্র্যের হার এবং সেখানে কাজ করার সুযোগ কম থাকায় নারী ও শিশু পাচার করা হয়। রয়েছে নারীদের ‘যৌ’ন’ হয়রানি ও শিশুদের জোরপূর্বক শ্রম। যা খুবই উদ্বেগজনক। পরিস্থিতির উন্নতির জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। বৈধ অভিবাসন নিশ্চিত করতে, বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকটি আইন সংশোধন করেছে এবং একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ খাতে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।
সিওভান মুলালী বলেন, বাংলাদেশ সরকার বৈধ অভিবাসন নিশ্চিত করতে অনেক উদ্যোগ নিয়েছে তবে এ খাতে আরও কাজ করতে হবে। নিরাপদ ও আইনগত অভিবাসন নিশ্চিত করতে, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় এই খাতকে আরও বেশি মনোযোগী করতে হবে এবং তদারকি বাড়াতে হবে। এসব ক্ষেত্রে দেশের ভেতরে পুলিশের তদন্ত ও মনিটরিংয়ে অনেক পার্থক্য রয়েছে।
বিশেষ দূত বলেন, শ্রম অভিবাসন খাতে আরও নজর দিতে হবে। শ্রমিক হিসেবে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে এ খাতকে শক্তিশালী করতে হবে। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের বিদেশে পাঠানোর আগে নিয়োগ প্রক্রিয়া, কারা কর্মী নিচ্ছেন, শ্রমিক চলে যাওয়ার পর তাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যেসব দেশে কর্মীদের পাঠানো হয় সেখানে তাদের প্রতি নেতিবাচক আচরণ বা সেখানে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জাতিসংঘ বারবার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছে এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রকাশিত নথিতেও তা উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব দেশে শ্রমিকরা কাজ করতে যায়, বিশেষ করে গৃহকর্মীদের জন্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা সঠিক বিচার ও সাহায্য পান না। পরিস্থিতির উন্নতির জন্য, নিরাপদ এবং টেকসই অভিবাসন নিশ্চিত করার জন্য যেসব দেশে কর্মী পাঠানো হয় তাদের সাথেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখা উচিত। দূতাবাস এবং কনস্যুলার অফিসগুলি এই ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।
সিওভান মুল্লী বলেন, বিদেশ থেকে শ্রমিকরা দেশে ফিরেও নি’র্যা’ত’নে’র শিকার হয়। বিশেষ করে নারী শ্রমিকরা চরম সামাজিক নিপীড়নের শিকার। তাই বিদেশ থেকে ফেরা শ্রমিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, তবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে সিওবান মুলালী বলেন, উপযুক্ত ও শিক্ষার পরিবেশের অভাব এবং পর্যাপ্ত কাজের সুযোগের অভাবে রোহিঙ্গা জনসংখ্যার শরণার্থী শিবিরে মানব পাচার, ‘যৌ’ন’ নি’র্যাত’ন’ ও জোরপূর্বক শিশুশ্রম হচ্ছে। যা খুবই উদ্বেগের বিষয়।