গেলো বেশ কিছু দিন ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতি একেবারেই উত্তপ্ত হয়ে আছে। বিশেষ করে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে চলছিল নানা ধরনের আলোচনা আর সমালোচনা সেই সাথে এই সমাবেশকে নিয়ে ছিল বেশ সমালোচিত। এবার এ নিয়ে কথা বলেছে হোয়াইট হাউস। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো হুবহু:-
বাংলাদেশের জনগণকে হুমকি, ভীতি প্রদর্শন এবং সহিসংতা ছাড়া সমাবেশ নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানি আর বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শুক্রবার এ আহবান জানান যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি।
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ইনডিয়া আমেরিকা টুডে’র সাংবাদিক এবং গ্লোবাল স্ট্রেইট ভিউ-এর সম্পাদক পুনম শর্মার করা এক প্রশ্নের জবাবে জন কিরবি বলেন, ”বাংলাদেশে সহিংসতা আর ধরপাকড়ের যেসকল ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।”
চলমান পরিস্থিতির ওপর গভীর এবং গভীরতরভাবে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান নিরাপত্তা কাউন্সিলের এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, “আমরা খুব স্পষ্ট করে বলছি, বাংলাদেশে যা ঘটছে তা আবারও গভীর এবং গভীরতরভাবে নজর রাখা হচ্ছে।”
কিরবি বলেন, ”যতটা গভীরভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা যায় আমরা তাই করছি। দেশটিতে যা ঘটছে, যা দেখতে পাচ্ছি তা অবশ্যই উদ্বেগের।”
বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার তাগাদা দিয়েছেন জন কিরবি। একিসঙ্গে সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের ওপর সহিংসতার ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
সভা-সমাবেশে বাধা না দিতে সরকারকে আহবান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আবারো বলছে, বাংলাদেশের জনগণের অধিকার রয়েছে কোনো ধরনের ভীতি, হুমকি, হয়রানি এবং সহিংসতা ছাড়া শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার।”
তিনি বলেন, “কোনো ধরনের প্রাণহানি এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন ছাড়া জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং বিক্ষোভের অধিকার নিশ্চিত করার আহবান জানাচ্ছি।”
রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ্য করে জন কিরবি বলেন, “আমরা চাই, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এবং হয়রানি ও ভীতি ছড়ানো থেকে নিজেদের বিরত রাখবে।”
তিনি বলেন, ”আমরা চাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শনের কাজে সম্পৃক্ত না হয়।”
কিরবি বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বলবো কোনাে রাজনৈতিক দল বা তার কর্মী যেন অন্য কোন দল বা তার কর্মীকে কোনো ধরনের ভয়-ভীতি, হুমকি বা হামলা না করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে।”
সহিংসতার ঘটনাগুলোর স্বচ্ছ এবং দ্রুত তদন্তের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “ওয়াশিংটন চায় সহিংসতার ঘটনাগুলো যেন দ্রুততা, স্বচ্ছতা আর নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পূর্ণ তদন্ত করে বাংলাদেশ সরকার।”
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিকে ইংগিত করে কিরবি বলেন, “সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে হলে প্রার্থীদের জন্য এমন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে যেখানে তাদের ভোটাররা কোনো ধরনের সহিংসতা আর হয়রানি ছাড়া ভোট দিতে পারবে।”
প্রসঙ্গত, এ দিকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ নিয়ে দিয়েছে বিবৃতি। তারা জানিয়েছে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সরকারকে সচেষ্ট থাকতে হবে। সেই সাথে নিশ্চিত করতে হবে তাদের মানবাধিকার।