Saturday , September 21 2024
Breaking News
Home / International / বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা জবাব জানিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা জবাব জানিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির অবস্থা বেশ অস্থির। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল করছে দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ। আর এই সব কিছুই পর্যবেক্ষণে রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। জানা গেছে ভিন্নমতাবলম্বীদের হয়রানি বন্ধ করতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভয়ভীতিমুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, একটি উন্নয়ন সহযোগী যা বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য আর্থ-সামাজিক অর্জনের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন প্রদান করেছে, বিশ্বাস করে যে সহিংস রাজনৈতিক পরিবেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

বুধবার, রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ওয়াশিংটনের ফরেন প্রেস সেন্টারে প্রশাসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক অগ্রাধিকার নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন। ওই ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগ সমন্বয়কারী জন কিরবি একাধিকবার বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেন এবং এখানকার রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা ব্যাখ্যা করেন। হাই-ভোল্টেজ ব্রিফিংয়ে, বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা লক্ষাধিক মানুষের বিক্ষোভের বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে ভিন্নমতের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করার উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেন। কুর্দিস্তানের মানুষ এবং ইরানে সরকার পরিবর্তনের দাবি।

ব্রিফিংয়ে জাস্ট নিউজের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদক মুশফিকুল ফজল আনসারী এবং পরে কুর্দিস্তানের সাংবাদিককে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, শুধু ইরান বা পূর্বে উল্লেখিত বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সর্বত্র তাদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত। মতামত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে ‘স্পষ্ট’ এবং ‘অভিন্ন’ বলে দাবি করে তিনি বলেন, বিডেন প্রশাসন বিশ্বাস করে যে কোনো দেশে যে কোনো ব্যক্তির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার সীমাহীন সুযোগ থাকা উচিত। মার্কিন নিরাপত্তা প্রশাসনের কর্মকর্তা বলেন, যেকোনো সরকারের উচিত জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করা, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিরোধিতা বা ভিন্নমতের পরিবর্তে সহযোগিতার আহ্বান জানানো। আর এ জন্য বাকস্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি মুশফিক ব্রিফিংয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন করছে, নোবেল বিজয়ী ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো মুক্ত নন। সরকার দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে কালো আইন প্রয়োগ করছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে দুটি প্রহসনমূলক নির্বাচন দেখেছে দাবি করে তিনি বলেন, ওই দুটি নির্বাচনে প্রহসন ও অনিয়মের কথা স্টেট ডিপার্টমেন্ট, মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। বাংলাদেশে আরেকটি জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশে আরেকটি নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন দেখতে যাচ্ছেন? এটা অংশগ্রহণমূলক হবে কি না তা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের এ বিষয়ে কোনো পর্যবেক্ষণ আছে কি?

নিরাপত্তা পরিষদের সমন্বয়ক এডমিরাল জন কিরবি এর জবাব দেন। ব্রিফিংয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সাংবাদিক ইরানে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, ব্যাপক হামলা, গ্রেপ্তার, মত প্রকাশে বাধা এবং বিরোধীদের আন্দোলনের সুযোগ না থাকা নিয়ে মার্কিন সরকারের অবস্থান জানতে চান।

জবাবে ইরানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে সাবেক মার্কিন এডমিরাল বলেন, ২-৩ সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র অধিকারের পক্ষে সোচ্চার। বিশ্বের যে কোনো স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে। শুধু ইরান নয়, পূর্বে উল্লেখিত বাংলাদেশ ইস্যুতে আমাদেরও একই অবস্থান। তিনি বলেন, জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার সুযোগ দিতে হবে। কোনো ধরনের হয়রানি, সহিংসতা ও ভয়ভীতি ছাড়াই সরকারের উচিত এই সুযোগ নিশ্চিত করা, যাতে বিক্ষোভে কোনো প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি না হয়। জন কিরবি, যিনি একসময় পেন্টাগন এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র হিসাবে কাজ করেছিলেন, বলেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মত প্রকাশের অধিকার রক্ষার বিষয়ে তার অবস্থানে অটল রয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সুযোগ থাকলেই দেশকে প্রতিষ্ঠিত বলা যায়। আমরা এটিকে গুরুত্ব সহকারে নিই।

প্রসঙ্গত, এর আগেও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে একাধিক বার কথা হয়েছে মার্কিন প্রশাসনে। সেখানে সকলেই বাংলাদেশে রাজনীতির লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী করতে বলেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দল গুলো যেন তাদের মোট করে রাজনীতির অধিকার পায় তও নিশ্চিত করতে বলেছে দেশটি।

About Rasel Khalifa

Check Also

বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানিতে বড় পতন

বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানিতে বড় পতন হয়েছে। শুধু আগস্টেই রপ্তানি কমেছে ২৮ শতাংশ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ভারতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *