সম্প্রতি সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিরোধী মতকে দমন করতে রাষ্ট্রীয় আইনশৃখঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠে আসে। বিশেষ করে র্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবর্হিভূত হ/ত্যাকান্ড, গু/ম, খু/নসহ নানা অভিযোগ তলে মানবাধিকার সংগঠন গুলো। এ বিষয়ে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘে চিঠি পাঠায় বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেকগুলো দেশের মানবাধিকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয় র্যাবের ওপর। তার পর থেকে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি এ বিষয়টি নিয়ে। বাশেলেটের বক্তব্য নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে বিবৃতি প্রকাশ হওয়ার পর নতুন করে আলোচনার জন্ম নিয়েছে বিভিন্ন মহলে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেটের বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ক বক্তব্য ভুল ভাবে প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানান মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদাসানি। ই-মেইল বার্তায় দেয়া ওই বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে বলছি যে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে হাইকমিশনার বাংলাদেশ সরকার, সুশীল সমাজ ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে বৈঠকে মানবাধিকার সংক্রান্ত অনেক বিষয় নিয়ে তার উদ্বেগ তুলে ধরেছেন। ঢাকা সফর শেষে তার দেয়া বিবৃতিতেও এ বিষয় উঠে এসেছে। হাইকমিশনার বাংলাদেশে মানবাধিকার ইস্যুতে ব্যাপকভাবে কথা বলার সাথে সাথে জেনেভায় ২৫ আগস্টের মেয়াদ-শেষের বিবৃতিতে তিনি বৈশ্বিক সমস্যা তুলে ধরেন। জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য, তেল ও অর্থনৈতিক সংকট, নাগরিক সমাজের কথা বলার অধিকারের মতো বিষয়গুলো ছিল।বাংলাদেশসহ সব দেশেই এসব সমস্যা বিদ্যমান। রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা সেখানে উঠে আসে, সেদিন ছিল রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের বার্ষিকী। এটি মানবাধিকার সম্পর্কিত বিশ্বব্যাপী প্রতিবেদন ছিল না।
ই-মেইল বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ সফর শেষে ঢাকায় দেয়া বক্তব্যে বাশেলেট বলেছিলেন, মানবাধিকার সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করার প্রথম ধাপই হলো সেগুলো স্বীকার করে নেয়া।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় হাইকমিশনারের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ঢাকাকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তারা বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষা ও অগ্রগতিতে সহায়তা করতেও প্রস্তুত।
মিশেল ব্যাচেলেট ১৪ থেকে ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ সফর করেন। পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আমলে নিয়ে তা অস্বীকার না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশে গু/ম, বিচারবহির্ভূত হ/ত্যা ও নি/র্যাতনের গুরুতর অভিযোগ নিয়েও তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জাতিসংঘের দূত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সমাধানের জন্য একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তকারী সংস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন।
প্রসঙ্গত, মিশেল ব্যাচেলেট এর বক্তব্যকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেটি সমীচীন দাবি করা হয়। মানবাধিকার বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে।