Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বাংলাদেশেও যেসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে ভারতের মন্ত্রিত্ব হারানো পার্থের

বাংলাদেশেও যেসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে ভারতের মন্ত্রিত্ব হারানো পার্থের

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এক মন্ত্রীর বিপুল পরিমাণ অর্থের দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে, যার কারণে ওই মন্ত্রীকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী এই বড় ধরনের অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত রয়েছেন, বলে জানা গেছে। এদিকে তিনি কোনো দেশে অর্থ প্রচার করেছে কিনা সে বিষয়টিও নিয়েও তদন্তে নামছে দেশটির বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা। আজ শনিবার অর্থাৎ ৩০ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি জনপ্রিয় দৈনিক ‘আনন্দবাজার’ এ ধরনের তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদ মাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখার্জির দুটি ফ্ল্যাটে বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান এবং ভারতের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) সূত্রের বরাত দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধ অর্থ পাচারের সম্ভাবনার খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা(ইডি)। বাংলাদেশেও প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থের অর্থের একটি অংশ হাওয়ালার মাধ্যমে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে গিয়েছে বলে ইঙ্গিত রয়েছে। সেই অর্থের একটি অংশ দিয়ে বাংলাদেশে বেনামে জমি ও বাড়ি কেনা হয়েছে বলেও তথ্য পাচ্ছেন তারা। বাকিটা তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো হতে পারে।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা পশ্চিমবঙ্গের এই প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কিছু লোককে শনাক্ত করেছে, যারা বাংলাদেশে পার্থের প্রভাব বলয় পরীক্ষা করে তার স্বার্থে কাজ করেছে বলে মনে করা হয়।

এই তালিকায় একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং বাংলাদেশ সরকারের একজন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে চিহ্নিত একজন সাবেক সেনাপ্রধান রয়েছে।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দৈনিকটিকে বলেন, পার্থের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে পাওয়া টাকার ছবি প্রকাশ হলে ‘বাংলাদেশ যোগ’ বিষয়টি তাদের নজরে আসে। ডাঁই করা নোটের মধ্যে একটি সাদা ব্যাগ ছিল, যার গায়ে কালো রঙে আঁকা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। টাকা যে ভাবে শক্তপোক্ত খামে ভরে ‘স্কচ টেপ’ দিয়ে প্যাক করা ছিল, তা যে সচরাচর বেআইনিভাবে পাচারের জন্য করা হয়, সেটিও গোয়েন্দারা বুঝেছেন।

আসলে প্রথম দিন থেকেই পার্থের বাংলাদেশ যোগে তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশি গোয়েন্দারা। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারত সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূলত দিল্লিতে তার কর্মসূচি থাকলেও একই সফরে তাকে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে কলকাতার একাধিক সংস্থা। তার পরপরই বাংলাদেশের গোয়েন্দারাও দেখতে চান পার্থের এই কাণ্ডে বাংলাদেশ যোগ কতটা গভীরে আছে।

ইডি-সূত্র অনুসারে, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের কাছে এই যোগাযোগ এবং কুমিল্লার লোক পার্থের ‘অর্থ ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য প্রবাহ’ খতিয়ে দেখতে চিঠি পাঠিয়েছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পর্যন্ত চিঠিটি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পায়নি। তবে তারা ইতিমধ্যেই এই তদন্ত শুরু করেছে।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, পার্থের এক বান্ধবী (অর্পিতা নয়) বিগত রাজ্য সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর আমলে নিয়মিত বাংলাদেশে আসতেন এবং সেখানকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করতেন; যা পরে সে দেশে অর্থ বিনিয়োগে কাজে লাগানো হয়েছে। ইডি সূত্র আরও দাবি করেছে, বাংলাদেশে পার্থের জমি ও বাড়ির দেখাশোনা করতেন এই বান্ধবী।

প্রাথমিক তদন্তে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের সঙ্গে ‘বিশেষ ঘনিষ্ঠতা’ তৈরি করে বান্ধবী তাকে ব্যবহার করেছে। প্রবীণ এই শিক্ষানুরাগীর হাত ধরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের গোয়েন্দারা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন। তারা আশা করছেন যে চিঠিটি পাওয়া গেছে তার সাথে সাথে ভারতের বেশ কয়েকটি তদন্তকারীরা এই ঘটনার বিষয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট ক্লু দিবেন, যেগুলো পাথের বিষয়ে তদন্ত করতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশে তার অর্থ পাচারের বিষয়ে প্রাথমিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *