মানুষ বিপদে পড়লে যার উপর ভরসা করে তারাই যদি বিপদের কারণ হয়ে ওঠে তাহলে তার থেকে কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না। মানুষের মানবতা যে কতটা নিচে নেমে গেছে সেইটা আসলে বলার অপেক্ষা রাখেনা। সম্প্রতি জানা গেল ঘটনার তদন্ত করতে এসে বাদীট কাছে তদন্তকারী কর্মকর্তা চাইলেন ঘুষ আর সেই অডিও কিল্প হয়ে যায় ফাঁস।
রংপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার তদন্তে একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা বাদীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অডিও ক্লিপ পেয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) নিহতের পরিবার ঘুষের অডিও রেকর্ডিং প্রকাশ করে। আফসানা মিমির বাবা তদন্ত প্রতিবেদন কবে দেবেন জানতে চাইলে এক নারী নারী কণ্ঠে বলেন, যত তাড়াতাড়ি আপনি আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারবেন, তত তাড়াতাড়ি রিপোর্ট পাবেন।
একই অডিওতে আবারও পুরুষ কন্ঠে বলা হয়, আমি যে ১০ হাজার দিয়েছি তা দিয়েই কাজটি করেছেন তিনি। তখন একজন মহিলা কন্ঠ বলল, চল অফিসে গিয়ে আগে কথা বল। এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা শিখা রানীর বিরুদ্ধে বাদীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদল-১ বাদী হয়ে যৌতুকের দাবিতে ও ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রংপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শিখা রানী রায়কে নির্দেশ দেন আদালত।
তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য ৫ মাস ধরে আন্দোলন করার পর শেষে শিখা রানী ঘুষ দাবি করলে তার দরিদ্র বাবা আফসার আলী কষ্ট করে ১০ হাজার টাকা জোগাড় করতে সক্ষম হন। কিন্তু বুধবার (১৩ জুলাই) আদালতে অভিযোগ দায়েরের কারণে টাকা ফেরত দিতে উপজেলা পরিষদে গেলে শিখা রানী রায় ও তার কার্যালয়ের কর্মচারীরা আফসার ও তার ছেলে শাহীনকে মারধর করে ধাওয়া দেয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শিখা রানী বলেন, টাকা সংক্রান্ত কিছু বলিনি। আপনি মনোযোগ সহকারে অডিও শুনতে হবে। রংপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।
প্রসঙ্গত, কিছু নিচ প্রকৃতির মানুষের কর্মকান্ডের জন্য বিপদগ্রস্ত সাধারণ মানুষ হয়ে পড়ছে আস্থাহীন। যাদের উপর ভরসা করছে তারাই সৃষ্টি করছে আরো নতুন সমস্যার। এই ধরণের দুষ্কৃতিকারীদের অপকর্মের জন্য সমাজ হয়ে যাচ্ছে কুলষিত।