মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে যে ব্যক্তি বিএনপি অফিসে ব্রিফ করেছেন তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
রোববার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে ব্যক্তি বাইডেনের উপদেষ্টার পরিচয় দিয়েছেন তিনি ‘ভুয়া’ এবং তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ঠিক করা হবে।
এ কে আবদুল মোমেন যোগ করে বলেন, “জো বাইডেনের মতো একজন ব্যক্তি এমন একজন বোকাকে উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ করতে পারেন কিনা তা দেখার বিষয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে, তারা অমানবিক। তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে অন্য কেউ এমন কাজ করতে সাহস না পায়।”
বিএনপি-জামায়াত আবার আগুন-স”ন্ত্রাসের পথে। রোববার হরতাল ডেকে সহিং”সতা করছে শ্রমিক সমর্থকরা। ডেমরায় গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন দিয়ে এক হেলপারকে হ”ত্যা করেছে। সকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ও মোহাম্মদপুরে বাসে আগুন দেওয়া হয়। উত্তরায় গাড়ি ভাংচুর, ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করা হয়।
এর আগে শনিবার (২৮ অক্টোবর) শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার কথা বলেছিল বিএনপি। কিন্তু সেই সমাবেশ র”ণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘ”র্ষ হয়। সমাবেশ শুরুর আগেই প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হা”মলা চালায় তারা। বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় বিএনপি কর্মীরা। পরে তারা পুলিশ হাসপাতালে হা”মলা চালায়। সেখানে ১৯টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হাম”লায় এক পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন।
পরে সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয়ে ইংরেজিতে বক্তব্য দেন মিয়া আরাফি নামের এক ব্যক্তি। তবে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস বলছে, ওই ব্যক্তি মার্কিন সরকারের সদস্য নন।
সন্ধ্যায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সংবাদ সম্মেলনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।
মার্কিন দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির সমাবেশ ও সংঘর্ষের আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে মার্কিন দূতাবাস এ খবর অস্বীকার করেছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তবে এর আগে বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় পরিদর্শন ও সেখানে ব্রিফিংয়ের খবর ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে, যে ব্যক্তি নিজেকে মিয়া আরাফি বলে পরিচয় দিয়েছে, তিনি প্রকাশ করেছে যে তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ কয়েকজনকে বার্তা পাঠিয়েছেন।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হলেও বিএনপির টনক নড়ে প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর।
রাতে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তির বিষয়ে বিএনপির কাছে কোনো তথ্য নেই। মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তির বিষয়ে বিএনপিকে জানানো হয়নি বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।