বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার হুমকির এক মাস পর বাংলাদেশকে চাপ দিতে নতুন ছক নিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার জন্য দেশের আমদানিকারকদের চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের দমনে দেশটির আমদানিকারকদের নির্দেশনা দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৮ সদস্য। তাদের সা য়ে প্রচারণায় নেমেছে ‘প্রথম আলো’।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এখতিয়ার বহির্ভূত এমন অনধিকার চর্চা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে পরিষ্কার অবস্থান শ্রমিক নেতাদের। আর এটাকে বাংলাদেশকে পেছনে ঠেলে দেওয়ার মার্কিন ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা।
শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর নামে গত ১৬ নভেম্বর বিশ্ব অর্থনীতিতে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার খড়গ নিয়ে হাজির হয় যুক্তরাষ্ট্র। শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যারা নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি নির্দেশনা। এমন সমালোচনার মধ্যেই এবার বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের পোশাক শিল্পকে প্রাণহীন পরিণত করতে নতুন পরিকল্পনা এঁকেছে মার্কিন কংগ্রেস।
গেল ১৫ ডিসেম্বর, ৮ দফা দাবি কার্যকর করতে দেশটির আমদানিকারকদের সংগঠন অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) কে একটি চিঠি দিয়েছে কংগ্রেসের ৮ সদস্য। যেখানে, বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন ২৩ হাজার টাকা করতে দেশটির ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চেপে বসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের অবস্থানকে সায় দিয়ে তা প্রচারে নেমেছে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম প্রথম আলো।
এ ব্যাপারে শ্রমিক নেতাদের অবস্থান বেশ স্পষ্ট। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই বাংলাদেশের শ্রমিকদের ভালো থাকতে দেবে না। বরং ক্ষয়ক্ষতি বাড়াতে একের পর এক কৌশল নিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন কংগ্রেসের এখতিয়ার বহির্ভুত এমন নাক গলানো যার বড় প্রমাণ।
ন্যাশনাল গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, মজুরি কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সে বিষয়ে তাদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। আমরা ২৩ হাজার টাকা দাবি করি। এর বেশি হবে না। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এর কম নির্ধারণ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চাপ দেবে দেশের মালিকদের সাপ্লাইয়ারদের ওপর। তার চাপ পড়বে শ্রমিকদের ওপরে। এটা কোনভাবেই যুক্তিসংগত কথা না। আমি এটার বিরোধিতা করি।’
এক দফায় ৫৬ শতাংশের বেশি বেতন বৃদ্ধির পরও মার্কিন কংগ্রেসের এমন নকশাকে বাংলাদেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা।
চিঠিতে ওয়াশিংটনের দাবি অনুযায়ী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে অবস্থিত কারখানায় শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতেও এএএফএকে বলা হয়েছে। খবর সময় সংবাদের।