করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি সমাজের সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটেছে অনেক বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা আহরণকারী শিক্ষার্থী বা সাধারণ পরিবারের কেউ, মানসিক অবসাদগ্রস্ত অবস্হা থেকে কেউই মুক্ত না। নিত্যদিনই কোনো না কোনো আত্মহননের ঘটনা জানা যাচ্ছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম মারফত। এমনই আরো একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়৷
চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন রুমানা আক্তার (২৬) নামে দুই সন্তানের জননী।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের কোরবানীয়া ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রুমানা ওই এলাকার হাফেজ শফিকুর রহমানের স্ত্রী। তার ৯ বছর বয়সী এক ছেলে ও ৭ বছর বয়সী এক কন্যা রয়েছে।
রুমানার হাতের লেখা চিরকুটটি হুবহু তুলে ধরা হলো— ‘আমার দুটি সন্তানকে সবাই দেখে রাখবেন। এই পরিবারে আমার সন্তানদের কেউ রাখবেন না। সবার কাছে অনুরোধ। বাঁচার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্ত আর বেঁচে থাকা সম্ভব হলো না। শুধু আমার শাশুড়ির কারণে। মানসিকভাবে অনেক অত্যাচারিত মেয়ে আমি। আর পারছি না। আর পারছি না। আর পারছি না। কবরই আমার জন্য শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ হাফেজ।’
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ওই চিরকুটের লেখা রুমানার কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, অলাভজনক বেসরকারি সংস্হা আঁচল ফাউন্ডেশনের পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে গত বছরে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ১০১ জন শিক্ষার্থী নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। এর সাথে অন্যান্য আত্মহত্যাগুলোর হিসাব জানা গেলে তা যে আশঙ্কাজনক কোনো সংখ্যাকে নির্দেশ করবে, সে সম্ভাবনা আছে পুরোমাত্রায়।