প্রয়াত ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতীতের কিছু স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে টানা চারটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। শেয়ার করেছেন হুমায়ুন আহমেদের পাঠানো ডিভোর্স নোটিস।
প্রথম স্ট্যাটাসে গুলতেকিন বলেন, ‘এই খামের ভেতরে আরেকটি খাম খুব সাবধানে রাখা ছিল।
আজ ট্যাক্সের জন্য কিছু কাগজ খুঁজতে গিয়ে এটি (ডিভোর্স নোটিস) পেলাম।’
এরপর বিচ্ছেদ নোটিশের চিঠির খাম ও নোটিশের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন তিনি। ক্যাপশনে, ” “এ ধরণের হলদে খামে চিঠি আসলে আমার মেয়ে শীলা বলতো, এগুলো তোমাকে লেখা প্রেমপত্র। শীলার বাবার লেখা আত্মজীবনীমূলক বই পড়ে অনেকেই আমাকে চিঠি লিখতো।”
৬ জুন, ২০০৪, স্কুল থেকে ফেরার পথে, শীলা বলেছিলেন, “‘তোমার একটা প্রেমপত্র এসেছে “ এরপর গুলতেকিন জানান, খাম খুলেই দেখতে তিনি পান হুমায়ূনের পাঠানো ডিভোর্স নোটিস।”
অন্য একটি স্ট্যাটাসে মেয়ে শীলার কথা উল্লেখ করে গুলতেকিন লিখেছেন, ‘আমি হাসতে হাসতে বললাম, শীলা বাবা, তোমার ড্যাডি তো আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে।’ ডিভোর্স নোটিসে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন, ‘বিবাহের পর থেকেই তাহার সহিত আমার কোনোমতেই বনিবনা হইতেছে না। ভবিষ্যতেও বনিবনা হইবার কোনোরূপ সম্ভাবনা না থাকায় আমি অপারগ…’
সর্বশেষ স্ট্যাটাসে গুলতেকিন লিখেছেন, “আমি আমার তিন মেয়ে আর ছেলেকে নিয়ে খুবই চমৎকার জীবন কাটাচ্ছি।
শুধু তারাই নয়, আমি এখন সাতজনের ‘নানু/নিন্নাই’। আলহামদুলিল্লাহ। আমার নিজের একটি ছোট থাকার জায়গা আছে। আমি তিনবেলা ভাল খাই, ভালো পোষাক পরি। এরপর আর কিছু চাওয়া নেই জীবনের কাছে।
দুঃখ দুঃখ ভাব করলে মহান আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন। এটা লিখে আফসোস করার সময় নেই। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এদেশের লাখ লাখ মেয়ে একই ধরনের সমস্যা নিয়ে বসবাস করছে। পার্থক্য হল, আমি একসময় একজন বিখ্যাত ব্যক্তির স্ত্রী ছিলাম, তাই মানুষ আমাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে খুব আগ্রহী। কিন্তু আমরা অন্যদের সম্পর্কে জানি না। লক্ষ লক্ষ মহিলা সংগ্রাম করছে, শুধু আমরা তাদের সম্পর্কে জানি না।
গুলতেকিন ১৯৭৩ সালে হুমায়ূন আহমেদকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে আসে এক ছেলে ও তিন মেয়ে। গুলতেকিনের সাথে বিচ্ছেদের দুই বছর পর, হুমায়ূন আহমেদ ২০০৫ সালে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন। তারপর ২০১৯ সালে গুলতেকিন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আফতাব আহমেদকে বিয়ে করেন। আফতাব কিছুদিন আগে প্রয়াত হন।