আজ শুক্রবার নেত্রকোণা জেলার পুর্বধলা উপজেলার এক বিয়ের অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহকে কারণ দেখিয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা একটি বিয়ে পন্ড করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসন। অথচ বিয়ে উপলক্ষে বর মোঃ আলেক মিয়া বিয়েবাড়িতে হেলিকপ্টারে করে আসেন।
জানা যায়, মহা ধুমধাম ও নাচেগানে চলছিল বিয়ের আয়োজন। এদিকে বর পক্ষকে বরণ করে নিতে বিশাল প্যান্ডেল সাজিয়ে প্রস্তুত কনে পক্ষ। বর কনেকে নিতে আসছে হেলিকপ্টার চড়ে। এ নিয়ে বেজায় উৎসুক এলাকাবাসী। শেষ পর্যন্ত বর হেলিকপ্টারে আসলেও বাল্য বিয়ের অভিযোগে বিয়ে পন্ড করে দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স। ফলে হেলিক্পটারে চড়ে বউ নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না বর শাহজালালের। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার পূর্বধলা জে.এম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন বিয়ের আয়োজনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের প্রবাসী বাবুল তালুকদার ও মা দুবাই প্রবাসী সুমী আক্তারের মেয়ের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মোঃ আলেক মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী মো. শাহজালালের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ের তারিখ নির্ধারন হয় আজ শুক্রবার। বিয়ের আয়োজনের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয় উপজেলার রাজপাড়াস্থ পূর্বধলা জে.এম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন।
মায়ের অসুস্থাতার কারন উল্লেখ করে বিয়েতে বর আসলেন হেলিপ্টারে চড়ে। নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত করা হয় পুলিশ। পরে মহা ধুমধামে বাল্য বিয়ে হচ্ছে এমন খবরে ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স, পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বুলবুল। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেয়ের মায়ের দেওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদটি যাচাই করে তা অনলাইনে পাননি এবং যাচাই করে দেখতে পান মেয়ের ১৮বছর পুর্ন হয়নি। পরে মেয়ের বিয়ের বয়স পুর্ণ না হওয়ায় বাল্য বিয়ের অপরাধে বর ও মেয়ের মায়ের মুচলেকা নিয়ে বিয়ে পন্ড করে দেন।
প্রসঙ্গত, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা ও সাধারণ মানুষের সচেতনতার ফলে গত কয়েক বছরে এরকম বেশ কিছু বাল্যবিবাহ ঠেকানো সম্ভবপর হয়েছে। নেত্রকোণার এই ঘটনাটিও এমন আরেকটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।