আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করতে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। তার ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিরোধী দল বিএনপি এ আলোচনায় অংশ গ্রহন করেনি তাদের দাবি নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেয়। বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না এবং এ দাবি তারা রাজ পথে আন্দোলনের মাধ্যমে আদায়ের কথা জানিয়েছেন। ঐকমত্যের মাধ্যমেই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত সম্ভব বলে মন্তব্য করে যা বললেন (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
প্রধান নির্বাচন কমিশানার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘ভোটের পদ্ধতি বদলে নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমেই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।’
রোববার (৩১ জুলাই) বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনী ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিমত ব্যক্ত করেন সিইসি।
তিনি বলেন, ‘ভোট কারচুপি যাতে না হয়, সে জন্য একটা সিস্টেম চাচ্ছেন, যাতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দলগুলোর সঙ্গে নিজেরাই আলোচনা করুন। তাহলে ঐকমত্য তৈরি হতে পারে। সিস্টেম নির্বাচন করে দিবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির ধারাবাহিক সংলাপের শেষ দিনে সকালে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা।
জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু। তিনি বর্তমান ব্যবস্থার পরিবর্তে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে ভোটের প্রস্তাব তোলেন।
চুন্নু বলেন, ‘তিনটি পদ্ধতি নির্বাচন করা হয়েছে, কোনোটিই বিতর্কের বাইরে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান সিস্টেমে ফেরেশতা দিয়েও ফেয়ার নির্বাচন করতে পারবেন না বলে আমাদের অনুমান।
বর্তমান ব্যবস্থায় ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতিটি আসনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সংসদ গঠিত হয়। সংখ্যাগত আনুপাতিক পদ্ধতি চালু হলে প্রতিটি দলের প্রাপ্ত মোট ভোটের অনুপাতে সংসদের আসন বণ্টন করা হবে।
জাতীয় পার্টির আগে থেকেই দেশের বামপন্থী দলগুলো সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
জাপা মহাসচিবের প্রস্তাবের বিপরীতে সিইসি বলেন, ‘দশ বছর আগেই আপনারা প্রস্তাবটা উপস্থাপন করেছিলেন। এটা নিয়ে তো আপনাদের সরব হতে হবে; কাউকে না কাউকে একটা নেতৃত্বসুলভ ভূমিকা নিতে হবে।’
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সংলাপে বলা হয়, ইসি যতই দক্ষ হোক না কেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে ‘গ্রহণযোগ্য হবে না’।
সিইসি বলেন, ‘আপনি বলেছেন, ব্যবস্থা বদলাতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থায়, আপনি যথার্থই স্বীকার করেছেন, এ সিস্টেমে আমি যত্ দক্ষতা, যোগ্যতা দেখাই না কেন, সকলের কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উঠে আসা কঠিন।’
এ সময় কাজী হাবিবুল আউয়াল আশা প্রকাশ করেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে করণীয় নির্ধারণে ইসি রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শকের ভূমিকা পালন করবে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, ফখরুল ইমাম, মীর আবদুস সবুর আসুদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, রেজাউল ইসলাম ভূঁই, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা হোসেন, জহিরুল ইসলাম জহির, আল মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু সংলাপে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যমত সৃষ্টির প্রতি গুরুত্ব দেন (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি আরও বলেন, গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করা ইসির পক্ষে সম্ভব নয় সকল দলের সহযোগিতা ছাড়া।