রাজনৈতিক মতৈক্যের ঐকমত্য খুবই প্রয়োজন। আমরা একদিকে বৃহৎ ঐকমত্য দেখতে পাই। অন্যদিকে সরকার তাদের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী হলে আমরা খুবই বিভ্রান্ত। আমরা সমঝোতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। সিইসির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, আইন আমাদের অনুমতি দেয় না বলে আমরা শটগান আনতে পারি না। অন্য কেউ যদি পিস্তল নিয়ে আসে বা ১০০ জন নিয়ে আসে তবে তা সরকারী তহবিল থেকে মোকাবেলা করতে হবে। প্রশাসন যে নিরপেক্ষ থাকবে তার নিশ্চয়তা নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন যেকোনো পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নতুন সরকার হলে, তার একটা শর্ত থাকবে । সেজন্য সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই- পদ ছাড়ার আগে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যদি সত্য একটি নতুন যোগ্য নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে হয় – তাহলে আমাকে ডাকতে হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্প্রীতি, ঐকমত্য, সমঝোতা চাই। আমার দ্বারা না হোক, অন্য কারো দ্বারা যদি হয় তাই হোক। নির্বাচনের স্বার্থে চলে যেতে হলে আমাকে অনুরোধ করতে হবে না, কিছু বলার আগেই আমি চলে যাব। কিন্তু আমরা এখানে এই পোস্ট নিয়ে মজা করতে আসিনি। কঠিন দায়িত্ব নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে এসেছি এবং কঠিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এ জন্য আমি সব সময় আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সব রাজনৈতিক দলকে সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বড় দলগুলোর অংশগ্রহণ জরুরি। আমি কোনো দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করতে পারি না। তবে আমরা সব দলকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানাব। রোববার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাচন ভবনে এনডিএমের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে জনমতের সঠিক প্রতিফলন হয় না। দল ও প্রতিপক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণে সম্ভাব্য অনিয়ম, কারচুপি, দুর্নীতি, অর্থশক্তির প্রভাব, পেশিশক্তির প্রয়োগ ও নির্বাচনে প্রভাব অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, কমিশন সবার অংশগ্রহণ, সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। অন্যথায়, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে, যা কাম্য নয়। সিইসি বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা আশা, হতাশা ও বিতর্ক চলছে। বিতর্কের সমাধান করা দরকার। ইভিএম প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পাঁচ-সাতটি কর্মশালা ও উন্মুক্ত বৈঠক হয়েছে। কেউ কোনো ত্রুটি দেখাতে পারেনি। তারপরও ইভিএম নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েই গেছে। নির্বাচন কমিশনের উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কেন্দ্রে অনিয়ম, সহিংসতা, ব্যালট পেপার ছিনতাই হলে কতটা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। জাতীয় নেতৃবৃন্দ সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা ও ঐকমত্যের মাধ্যমে বিতর্কিত বিষয়গুলো সমাধান করে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ ও স্তরের ভিত্তি তৈরি করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশের ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বিএনএফ, বাংলাদেশ কংগ্রেস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সঙ্গে বসবে ইসি। এ সময় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এনডিএমের সঙ্গে সংলাপের পর বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি।