চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী নামক স্থানে বাড়িতে মা না থাকায় ১৩ বছরের এক কিশোরী মেয়ের সাথে একাধিকবার খারাপ কাজ করার অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদ আইয়ুব নামে ৪২ বছর বয়সী সৎ বাবার বিরুদ্ধে। অভিযোগের পর ঐ সৎ বাবাকে পুলিশ আটক করেছে। আজ বুধবার অর্থাৎ ২২ জুন দুপুরের দিকে বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছেন দুলাল মাহমুদ যিনি কর্ণফুলী থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, কিশোরীর মায়ের করা মামলায় সৎ বাবাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মো. আইয়ুব (৪২) পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের প্রয়াত উকিল আহমদের ছেলে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঐ কিশোরী মেয়েটির বাবার প্রয়ানের পর তার মা মো. আইয়ুবকে বিয়ে করেন। আগের পরিবারের তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে দাদির সঙ্গে বাবার বাড়িতে থাকে। দ্বিতীয় পরিবারে সে তার ছোট মেয়ে ও বোনকে নিয়ে উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের খুইদ্দারটেকে ভাড়া বাসায় থাকেন। মেয়েটির মা ও খালা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
গত শুক্রবার সকালে কিশোরীর মা তার মেয়ে ও বোনকে বাড়িতে রেখে পোশাক কারখানায় কাজে যান। দুপুর ১টার দিকে মেয়ের খালা ওষুধ আনতে ফার্মেসিতে যান। এ সুযোগে অভিযুক্ত আইয়ুব মেয়ের সাথে খারাপ কাজ করে। দুপুর দেড়টার দিকে ওই কিশোরীর খালা ফার্মেসি থেকে বাসায় ফিরে ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে চিৎকার করলেও কোনো সাড়া পাননি। একপর্যায়ে আইয়ুব দরজা খুলে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। পরে মেয়েটি তার খালাকে জানায়, পরে কিশোরী তার খালাকে জানায় তাকে প্রাণ নাশের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন আইয়ুব। রাত ৮টার দিকে মেয়েটির মা বাড়ি ফিরলে কিশোরী মেয়েটির খালা ঘটনাটি মেয়ের মাকে জানায়।
এ সময় মেয়েটি আরও জানায়, গত দুই বছরে তার মা ও খালা পোশাক কারখানায় গেলে আইয়ুব তাকে অনেক বার খারাপ কাজ করে। আইয়ুব এ ঘটনা জানালে ক্ষতি করার হুম”কিও দেন।
ঘটনার চারদিন পর সোমবার মেয়েটির মা বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় মাম”লা করেন। পরে রাতেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
খারাপ কাজের শিকার হওয়া কিশোরীর মা জানান, তার স্বামী মেয়ের সঙ্গে এমন কাজ করতে পারেন তা ভাবতেও পারেননি। তিনি আরও বলেন, আইয়ুবের হুম”কির ভ”য়ে তারা পুলিশের কাছে যেতে পারেননি।
কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ জানান, মেয়েকে খারাপ কাজ করার অভিযোগে সৎ বাবাকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ওই কিশোরকে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে এবং ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা নিতে বলা হয়েছে। ওসি আরও জানান, আসামিদের কা”রাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এই ঘটনার পর ওই এলাকায় অভিযুক্তকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এমন ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর ঐ সৎ বাবার শাস্তি কামনা করেন তার পরিবারের সদস্যরা। এমন ধরনের গর্হিত কাজ কিভাবে করতে পারলেন এই লোক তা চিন্তাও করতে পারেননি ঐ কিশোরীর মা। এই ঘটনায় তার মা সুবিচার চেয়েছেন এবং তাকে তালাক দেওয়ার কথাও বলেন।