বরিশালের একটি এলাকায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে তিনজন মিলে খারাপ কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। ঐ তিনজন যে মেয়েটির সাথে খারাপ কাজ করেছে তিনি হলেন তাদের বন্ধুর হবু স্ত্রী। এই ঘটনায় ঐ তিন বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা ঐ ছাত্রীকে একটি বাসায় মিথ্যা কথা বলে ডেকে নিয়ে খারাপ কাজ করে এবং সেটি তারা মোবাইল ফোনের মধ্যমে ভিডিও করে রাখে। অভিযুক্তরা হলেন একজন মাদ্রাসা শিক্ষক এবং মসজিদের ঈমাম ও একজন ছাত্র। গতকাল রবিবার অর্থাৎ ২৭ নভেম্বর রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার জাকির হোসেন ভূঁইয়া জানান, আসা”মিদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাদের কা’রাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানান, খারাপ কাজের শিকার হওয়া ঐ মেয়েটির করা মামলা গ্রহণের পর রোববার রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রে”ফতারকৃত আসামিরা হলেন, বরিশাল নগরীর রূপাতলী উকিল বাড়ি রোডের জামিয়া কাসিমিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আবিদ হাসান ওরফে রাজু, বাবুগঞ্জ উপজেলার গাঙ্গুলী বাড়ি মোড় এলাকার বায়তুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম আবু সাইম হাওলাদার ও সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র হৃদয় ফকির।
পুলিশ জানায়, গ্রেফ’তারকৃত তিন আসামি তিনটি এলাকার বাসিন্দা হলেও তারা একই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ওই সূত্রে জানা যায়, পরিচয় ও ঘটনার সময় তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একই বাড়িতে মিলিত হয়ে অপরাধ সংগঠিত করে।
মামলার জবানবন্দিতে বাদী উল্লেখ করেন, ওই তরুণী বিমানবন্দর থানার পাংশা এলাকার একটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। একই এলাকার এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এরপর পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়। বিষয়টি জানতেন ছেলেটির বন্ধু আবিদ হাসান, সাইম ও হৃদয় ফকির। চলতি বছরের ২০ আগস্ট রাতে হৃদয় ফকির ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোনে কল করে জানায়, ঐ ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হলেও সে অন্য নারীদের সঙ্গে মেলামেশা করছে।
বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করেননি ওই ছাত্রী। পরে অপর দুই বন্ধু বললে বিশ্বাস করেন এবং হবু স্বামীর বন্ধুরা জানায়, ২৭ আগস্ট বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শেরেবাংলা রোডে তার হবু স্বামী আরেক মেয়েকে হৃদয় ফকিরের ভাড়া বাসায় নিয়ে যাবে। বাড়িটি হামিদ লেনে। ঐ ছাত্রীকে হবু স্বামীকে হাতে নাতে ধরতে বন্ধুর বাড়িতে যেতে বলা হয়। কথামতো সকাল ১০টার দিকে ওই ছাত্রী সেখানে গেলে তিনজন মিলে তাকে খারাপ কাজ করে মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকর্ড করে।
এদিকে খারাপ কাজের ঘটনার পর ঐ ছাত্রী অসুস্থ হলে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হু”মকি দেয় তারা। এতে বাধ্য হয়ে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যায় সে। এরপর হবু স্বামীর বন্ধুরা ওই ছাত্রীকে খারাপ কাজের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করে ওই বাসায় নিয়ে ৫ বার খারাপ কাজ করে। পরে তারা ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করলে ওই ছাত্রী টাকা দিতে অপারগতা জানায়।
এক সময় অভিযুক্তরা ঐ ভিডিও মেয়েটির হবু স্বামীর বাবাকেও দেখায়, যার কারনে ঐ এলাকায় মেয়েটি বের হতে পারছেন না। ঘটনাটির বিষয়ে ওই ছাত্রী তার হবু স্বামীকে সবকিছু খুলে বলে। এরপর তার হবু স্বামী এবং মেয়েটি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে অভিযানে নামে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।