সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপ খনন করে গ্যাসের পাশাপাশি তেল পাওয়া গেছে। আগামী ১৫ বছরের জন্য এই কূপ থেকে বেশি সময় তেল উত্তলন করা যাবে। যার সুফল পাওয়া যাবে প্রায় ২০ বছর।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বড় খবর হলো আমরা প্রথম স্তরে তেল পেয়েছি। প্রথম দিন ২ ঘণ্টায় ৭০ ব্যারেল তেল উঠেছে। আমরা কাজ আপাতত বন্ধ করে দিয়েছি। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে, মজুতটা আমরা পরে জানব। আগামী ২০ বছর এখান থেকে সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুরো বিষয়টি বলা যাবে আরও চার থেকে পাঁচ মাস পর।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাস ছাড়াও কূপের উপরের অংশে ১,৩৯৭ থেকে ১,৪৪৫ মিটার গভীরে আরেকটি জোন পাওয়া গেছে। যেখানে গত শুক্রবার পরীক্ষা করে তেলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যার প্রাথমিকভাবে এপিআই গ্রাভিটি ২৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি। সেলফ প্রেসারে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে। পরীক্ষা শেষ হলেই জানা যাবে মোট তেলের মজুদ।
দেশে বর্তমানে ৮.৪৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে
তিনি বলেন, একযোগে উৎপাদন করা হলে এই কূপটি প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর সাসটেইন করবে। যদি ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে উৎপাদন করা হয়, তাহলে কূপটি ১৫ বছরেরও বেশি সময় সাসটেইন করবে। সব মিলিয়ে এখান থেকে প্রায় ২০ বছর সুফল পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, আমরা তেলের অংশ তিনটি স্থানে পরীক্ষা করার অনুমতি দিয়েছি। আরও পরীক্ষা করে আমরা বলতে পারব কতটা আমরা মজুত কত সেটা বলতে পারব। ভাল খবর হল গ্যাস এবং তেলের মাত্রা ভিন্ন। আগে আমাদের গ্যাসের সঙ্গে কিছু তেল আসত। এখন তেল আলাদা হয়ে গেছে। এটা সবার জন্য ভালো খবর।
তিনি বলেন, গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপ খনন করে চার স্তরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। কূপে ২ হাজার ৫৭৬ মিটার গভীরতায় খনন সম্পন্ন করা হয়। এই কূপে চারটি স্তরে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। নিচের স্তরটি ২৫৪০-২৫৫০ মিটার টেস্ট করে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রবাহ পাওয়া যায়। এর ফ্লোয়িং প্রেসার ৩২৫০ পিএসআই। এখানে গ্যাসের মজুতের পরিমাণ ৪৩-১০০ বিলিয়ন ঘনফুট।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আরেকটি ভালো গ্যাসের স্তর ২৪৬০-২৪৭৫ মিটার পাওয়া গেছে, এখানে পরীক্ষা করলে ২৫-৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।২২৯০-২৩১০ মিটারে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, দুই মাস আগে সিলেট তামাবিল-জাফলং মহাসড়কের পাশে গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়নের বাঘের রোড এলাকায় অবস্থিত এই অনুসন্ধান কূপে খনন কাজ শুরু করে সরকারি প্রতিষ্ঠান সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড কোম্পানি। গত ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে কূপটির উদ্বোধন করেন।