পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়া বিমানে ওঠা শিশু জোনায়েদ মোল্লার দায়িত্ব নিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী মাহাবুবুল আলম। তার লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ সব ইচ্ছা পূরণ করবেন বলে জানান ডিসি।
এছাড়া তিনি শিশু জোনায়েদকে সাধারণ পাঠ্যক্রম শিক্ষার জন্য সরকারি শিশু পরিবারে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৯টি গেটে নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ এড়িয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ওঠেন ১২ বছরের এক শিশু জোনায়েদ মোল্লা। এতে দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এরপর আলোচনায় আসে শিশু জোনায়েদ।
জোনায়েদ মুকসুদপুর উপজেলার পারিহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্লার প্রথম ছেলে। সম্প্রতি গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম জোনায়েদ ও তার বাবা ইমরান মোল্লাকে তার কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানান। এরপর গত বুধবার (৪ অক্টোবর) জোনায়েদ ও তার বাবা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেন।
এ সময় ডিসি কাজী মাহাবুবুল আলম জোনায়েদের ইচ্ছা জানতে চাইলে বলেন, তিনি সাধারণ পাঠ্যক্রমে পড়াশোনা করে পাইলট হতে চান। এছাড়া বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, বাড়ির পাশে ব্রিজ নির্মাণ, বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ ও পছন্দের খাবার খাওয়াসহ বেশ কিছু ইচ্ছার কথাও জানান তিনি।
পরে জেলা প্রশাসক জোনায়েদকে সাধারণ পাঠ্যক্রম শিক্ষার জন্য সরকারি শিশু পরিবারে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া শিশু জোনায়েদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা, চিকিৎসা ও সব ইচ্ছা পূরণের দায়িত্ব নেন তিনি। সভা শেষে জেলা প্রশাসক পিতা ও পুত্রকে তাদের পছন্দের খাবার খাওয়ান এবং জোনায়েদকে খেলার জন্য ২টি ব্যাডমিন্টন উপহার দেন।
জোনায়েদ বলেন, ডিসি স্যার আমাকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছেন। পড়াশোনা করে একদিন পাইলট হব। জীবনেও বাড়ি থেকে পালাবো না। স্যার আমাদের ভালো খাবার খাওয়ালেন। ভবিষ্যতে ঘুরতে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান তিনি।
জোনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, ডিসি স্যার আমার ছেলের ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে আমি খুবই খুশি। আমার ছেলে এখন মানুষ হতে পারে। স্যারের জন্য অনেক দোয়া থাকবে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম বলেন, শিশু জোনায়েদের এমন কর্মকাণ্ডে আমি সত্যিই বিস্মিত। আমি সত্যিই তাকে দেখতে চেয়েছিলাম. তাই আমি তাদের বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানাই। বুধবার জোনায়েদ ও তার বাবা আমার অফিসে আসেন। পরে জোনায়েদ আমাকে তার কিছু ইচ্ছার কথা জানায়। পরে তার লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ সব ইচ্ছার দায়িত্ব নিই। তাকে সরকারি শিশু পরিবারে ভর্তি করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে জোনায়েদ সরকারি শিশু পরিবারে থাকবেন।